বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যবসা শুরু যার ২০ টাকায়

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২০ ১৩:০০

দেশের পাশাপাশি বিদেশেও যাচ্ছে তার পণ্য। গত দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত পণ্য পাঠাচ্ছেন লাবণী। সেই সঙ্গে কাজ করছেন জামদানি শাড়ি নিয়ে।

২০ টাকায় চুলের ক্লিপ কিনে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। তিন বছর পর সেই ব্যবসার মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকায়। কঠিন ছিল এই যাত্রাপথ। তবে সব বাধা পেরিয়ে তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা। তিনি এখন অনেকেরই প্রেরণা।

পরিশ্রমী ও সফল এই উদ্যোক্তার নাম ফেরদৌসী আক্তার লাবণী। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী চাঁদ বোয়ালী গ্রামে। তবে তার বেড়ে ওঠা সুনামগঞ্জ শহরে।

পরিবারের বড় মেয়ে লাবণী। তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন। পড়ালেখা শেষ করে চাকরির পেছনে ছোটেননি। অনেক ভেবেই উদ্যোক্তা হওয়ার পথে পা বাড়ান তিনি। তার প্রতিষ্ঠানের নাম স্টাইল ক্লসেট।

২০১৭ সালের জুলাই মাসে চুলের ক্লিপ দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন লাবণী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘স্টাইল ক্লসেট’ নামে একটি পেইজ খুলে তার ব্যবসার যাত্রা শুরু। এখন ক্লিপের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও বিক্রি করছেন। নিজেতো স্বাবলম্বী হয়েছেনই, পাশাপাশি আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন।

জামদানি শাড়ির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এটি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন লাবণী। ছবি: নিউজবাংলা 

 

প্রথম প্রথম বিক্রি কম হলেও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের সাড়া। বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্ডার আসতে শুরু করে। পছন্দের পণ্য পৌঁছে দিয়ে আস্থা অর্জন করেন ক্রেতাদের। প্রথম দিকে পণ্য একাই ক্রেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিলেও এখন ব্যবসা বড় হওয়ায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য রেখেছেন কয়েকজন কর্মী।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এবং বিদেশে নিয়মিত পণ্য সরবরাহ করে আসছেন তিনি। তার পণ্যের মধ্যে রয়েছে বাটিক থ্রি-পিস, ব্লক থ্রি-পিস, হ্যান্ডপ্রিন্ট ওড়না, ওয়ান পিস, শিশুদের পোশাক, বিছানার চাদর, কুশন কভার, ব্যাগ, শো-পিস, শাড়ি, উপহার সামগ্রী ও পাটের তৈরি বিভিন্ন পণ্য।

দেশের পাশাপাশি বিদেশেও যাচ্ছে তার পণ্য। গত দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত পণ্য পাঠাচ্ছেন লাবণী। সেই সঙ্গে কাজ করছেন জামদানি শাড়ি নিয়ে।

জামদানি শাড়ির প্রতি তার আগ্রহের বিষয়ে লাবণী বলেন, ‘ ক্রেতাদের চাহিদার কারণে ব্যবসার ক্ষেত্র হিসেবে ঐতিহ্যবাহী জামদানিকে বেছে নিয়েছি। নারায়ণগঞ্জের জামদানিপল্লি ও দেশের বিভিন্ন এলাকার তাঁতিদের কাছে ঘুরে ভালো মানের জামদানি শাড়ি সংগ্রহ করে সেগুলো কাস্টমারদেরকে পৌঁছে দিলেই আমার শান্তি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জামদানি দেশীয় শাড়ি হওয়ায় বাইরের দেশগুলোর কাছে এর আরও প্রচার করার ইচ্ছা রয়েছে।’

ক্রেতাদের পছন্দমতো শাড়ি বানিয়ে কম খরচে বিদেশে আন্তর্জাতিক কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠান। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন লাবণী।

লাবণীর ইচ্ছা একটি বড় কর্মক্ষেত্র তৈরির। যেখানে কাজ করার সুযোগ পাবে শতশত মানুষ।

ফেরদৌসী আক্তার লাবণী বলেন, ‘আমি চাই আমার ব্যবসার আরও প্রসার হোক। দেশের প্রতিটি জেলায় যেন আমি শোরুম দিতে পারি। নারীদের জন্য কর্মসংস্থান করতে পারি। সেই জন্যেই আমি কাজ করে যাচ্ছি। স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার স্বার্থকতাটাই আলাদা।

তিনি বলেন, ‘একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মাঠে নেমে পড়তে হবে। প্রতিবন্ধকতা থাকবেই, তবে ইচ্ছা থাকলে উপায় হবেই। আপনার যে কাজে আগ্রহ, সেটা দিয়েই শুরু করুন। একদিন আপনি সফল একজন উদ্যোক্তা হয়ে যাবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর