‘নতুন সময়ের নয়া প্রযুক্তি, নবপ্রজন্মের সবুজ পৃথিবী’ এ স্লোগান নিয়ে তৃতীয়বারের মতো শুরু হলো ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে অনুষ্ঠিত এক লঞ্চিং প্রোগ্রামে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
আগের দুটি সিজন সফলভাবে পরিচালনার পর এরই ধারাবাহিকতায় ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফারের সিজন-৩ চালু করলো ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের পক্ষ থেকে এ ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার সম্পর্কে জানানো হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ই-বর্জ্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষায় ওয়ালটনের এ উদ্যোগ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার সিজন-৩ এর উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম এবং পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও জনপ্রিয় অভিনেতা আজিজুল হাকিম।
অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ অফারের বিস্তারিত তুলে ধরেন ওয়ালটন কম্পিউটার পণ্যের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তৌহিদুর রহমান রাদ।
তিনি জানান, ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, অল-ইন-ওয়ান পিসি, মনিটর, প্রিন্টার ও ট্যাব ক্রয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা একচেঞ্জ সুবিধা পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে উল্লেখিত পণ্যগুলো ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে কোনো ব্র্যান্ডের (সচল কিংবা অচল) সমজাতীয় পণ্য ওয়ালটন প্লাজায় জমা দিয়ে এক্সচেঞ্জ সুবিধা গ্রহণ করা যাবে। তবে মনিটর ক্রয়ের ক্ষেত্রে টিভি এবং ট্যাবের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এক্সচেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, এ ক্যাম্পেইনের আওতায় যে কোনো ব্র্যান্ডের সচল বা অচল আইটি পণ্য জমা দিয়ে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা ডিসকাউন্টে ওয়ালটনের নতুন ডিজিটাল ডিভাইস কেনা যাবে। এমনকি এ সুবিধায় কেনা ওয়ালটন কম্পিউটার পণ্যের মূল্য ৩ মাসের কিস্তি সুবিধায় পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। দেশের সব ওয়ালটন প্লাজা থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত গ্রাহকরা এসব সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি না। বাংলাদেশ এখন মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করে দেবে এমন একটি প্রতিষ্ঠান আমরা খুঁজছিলাম। আমরা ওয়ালটনকে সেই জায়গায় পেয়েছি। বাংলাদেশে ডিজিটাল ডিভাইসের কোনো কোম্পানির নাম নিতে হলে সবার আগে ওয়ালটনের নাম নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশের সফলতা, কর্মসংস্থান এবং উদ্ভাবনের কথা বলতে গেলে ওয়ালটনের কথা বলতে হবে। বাংলাদেশে একটি প্রতিষ্ঠান যদি ইনোভেশনে নেতৃত্ব দিতে পারে, তবে সেটি ওয়ালটন। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগান মানেই ওয়ালটন।
তিনি আর বলেন, ‘বাংলাদেশে ই-বর্জ্য ও রিসাইক্লিংয়ের প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন। ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফারের এই উদ্যোগ অভিনব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওয়ালটনের ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার দেশের সামগ্রিক মঙ্গল বয়ে আনবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইসের ক্রেতারা শুধু আর্থিক সুবিধাই পাচ্ছেন না বরং দেশ ও পরিবেশের সুরক্ষায় অবদান রাখছেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেশকে দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুনঃব্যবহারে প্রতিনিয়ত আমাদের নানান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর আগে এয়ারকন্ডিশনার, টেলিভিশনসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয়েও আমরা ক্রেতাদের এক্সচেঞ্জের সুবিধা দিয়েছি। পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে আমরা পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছি। যার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ পদকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পদকে ওয়ালটন ভূষিত হয়েছে। ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফারের এ উদ্যোগ দেশকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।’
এস এম রেজাউল আলম বলেন, ‘রান্নাঘরের বর্জ্যকে সঠিক ব্যবস্থাপনা না করা হলে ঘরে থাকা যায় না। তেমনিভাবে আমাদের ঘর কিংবা কর্মস্থলে যেসব ই-বর্জ্য থাকে, সেগুলোরও সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা করা প্রয়োজন। আমরা প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবো। একইসঙ্গে প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলবো। আমরা ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু পুরনো ও আমদানি নিষিদ্ধ রিফারবিশড পণ্য দেশে প্রচুর পরিমাণে ঢুকছে। যা দেশের ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কঠিন করে তুলছে। এটি শিল্প ও মানুষের জীবনের জন্য হুমকি এবং দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ ও নজরদারি বাড়ানো এবং মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন বলে মনে করি।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার সিইও মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, ইভা রিজওয়ানা নিলু ও মো. হুমায়ুন কবীর, ওয়ালটন ডিজি-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর দিদারুল আলম খান, মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম ও রফিকুল ইসলাম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মফিজুর রহমান জাকির ও জিনাত হাকিমসহ অনেকে।