সরকার জনগণের দৃষ্টি সরাতেই পরীমনির মতো ইস্যুগুলো তৈরি করে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এটা অনেকেই না বুঝলেও তারা বুঝে গেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি মডেল পিয়াসা, মৌ ও চিত্রনায়িকা পরীমনি গ্রেপ্তার ইস্যু নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। তিনজনকেই একাধিকবার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
এই তিনজনের মধ্যে বিশেষ করে পরীমনিকে গ্রেপ্তার ও তিন দফা রিমান্ডে নেয়ার সমালোচনা করছেন বিশিষ্টজনরা। তার মুক্তির দাবিতে একাধিক সভাও হয়েছে।
এদের বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে, এমন অভিযোগে এত বড় অভিযান আর একের পর এক রিমান্ড আবেদন কেন, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গয়েশ্বর মনে করেন, এগুলো প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পিত কাজ। তিনি বলেন, ‘তিনি খুকুমনি, পরীমনি কয়েক দিন পরপর একেকটা আনতেছেন। এটা বুঝতে হবে না আমাদের, সুতরাং আমরা সব বুঝে গেছি।’
আদালত থেকে বের হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। ছবি: সাইফুল ইসলাম
জনগণ সরকারের পদত্যাগ চায় দাবি করে তিনি বলেন, ‘একটা পদত্যাগ করলে যদি সব সমস্যার সমাধান হয় তাহলে প্রতিটি সমস্যা নিয়ে আমরা কেন কথা বলব?
‘একটাই কথা রাখি, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করাতে আমরা বাধ্য হব। এক দফার আন্দোলনেই সুরাহা হবে। জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায় না।
‘আমাদের আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী, খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর আন্দোলন নয়। আমাদের আন্দোলন জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার। আমাদের আন্দোলন রাষ্ট্রের গণতন্ত্র ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার। আমাদের আন্দোলন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার। আমাদের আন্দোলন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার।’
মডেল পিয়াসাকে আদালতে তোলা হচ্ছে। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘ঘরে বসে করোনায় না মরে রাজপথে গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়ে ইতিহাসের বুকে নিজের নামটা লিখে যাই।’
তিনি বলেন, ‘চাকরি করলে আরও ১২ বছর আগে বড় সচিব থেকে অবসরে যেতাম, ব্যবসা করলে ওই দরবেশের মতো আমরাও ব্যবসায়ী হতাম। আমরা আসছি জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য। কার কত টাকা হয়েছে এতে আমাদের কোনো হিংসে নেই। সময়মতো হিসাব দিতে হবে টাকাটা কীভাবে হলো। কোন পথে হলো।
‘বড়লোক হওয়াটা অপরাধ নয়, কারণ বড়লোক কী করে হলেন, এটা কি পকেট মেরে হইলেন, নাকি ছিনতাই করে হলেন, নাকি প্রতারণা করে হইলেন সেটা দেখার বিষয় রয়েছে।‘
তারেক রহমান দেশে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেদিন তো বিমানবন্দরে মানুষের জায়গা হবে না, এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
‘তারেক রহমানের নাম মাতৃকোলে শিশুর কানে পৌঁছে দিচ্ছে আমরা যতটা না, তার থেকে বেশি সরকার। তারেক রহমানকে নিয়ে যতটা প্রচার তারা করছে, ততটা প্রচার আমরা করতে পারছি না।’
সরকার নানাভাবে ‘ফাঁদে ফেলে’ ২০১৮ সালের মতো বিএনপিকে আবার নির্বাচনের মাঠে নেয়ার চেষ্টা করবে বলেও মন্তব্য করেন দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদের এই নেতা। বলেন, ‘এখন বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে তারা নির্বাচনে যাবে কি না। শেখ হাসিনাকে রেখে একটি ফেরেশতা এনেও যদি নির্বাচন করানো হয়, তাহলেও সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো উপায় নেই।’