বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছয়টি জন্মদিনের তথ্য তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন, তার জবাব না দিয়ে বক্তব্যটিকে ‘রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারবর্হিভূত’বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সম্প্রতি এক বক্তব্যে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনের পক্ষে দালিলিক প্রকাশ প্রকাশের চ্যালেঞ্জ দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত মোট ৬টি জন্মদিনের কথা প্রকাশ পেয়েছে, যেগুলোর নথি আছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো তথ্যেও অন্য একটি দিন জন্মদিন হিসেবে উল্লেখ আছে।
এই বক্তব্যর জনাব না দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘গোটা দেশের মানুষ যখন করোনার টিকা ও জীবন-মৃত্য নিয়ে লড়ছে সেই সময়ে তারা এটাকে ডাইভার্ট করে দিতে চান বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়।
‘আমি মনে করি উনার (ওবায়দুল কাদের) বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বিবর্জিত। কোনো দায়িত্বশীল নেতার কাছ থেকে এই বিষয় নিয়ে এত কথা বলার আছে বলে আমি মনে করি না।’
সোমবার বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ সেলে চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন ফখরুল।
প্রতি বছর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এলেই খালেদা জিয়ার জন্মদিন ইস্যুটি সামনে আসে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এই দিনটিতে ঘটা করে জন্মদিন উদযাপন শুরু করেন বিএনপি নেত্রী। আওয়ামী লীগ অভিযোগ করছে, জাতীয় শোক দিবসে উল্লাস করতেই খালেদা জিয়া জন্মদিন না হলেও সেদিন উদযাপন করেন।
নানা সমালোচনার পর ২০১৫ সাল থেকে সেদিন কেক কাটা বাদ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। ওই বছর থেকে দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ হতো। আর গত দুই বছর মিলাদও এক দিন পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে সেদিন বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে এসেছেন।
সম্প্রতি একাধিক আলোচনায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেগম জিয়ার মেট্রিকুলেশন সনদ অনুযায়ী জন্মদিন ৯ আগস্ট ১৯৪৫। বিবাহ সনদ অনুযায়ী জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫। আবার পাসপোর্ট অনুযায়ী জন্মদিন ১৯ আগস্ট। আবার তিনি দাবি করেন, তার জন্মদিন ১৫ আগস্ট ১৯৪৫।
‘একজন মানুষের এতগুলো জন্মদিন থাকা নিয়ে দীর্ঘদিনের রহস্য এখন তিনি নতুন করে উন্মোচন করেন।’
নানা নাটকীয়তা শেষে গত ১১ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষায় খালেদা জিয়ার করোনা আক্রান্তের খবর জানানো হয়। সেই নমুনা পরীক্ষার জন্য দেয়া তথ্যে খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৮ মে ১৯৪৬।
সে বিষয়টিকে তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘তাহলে জনগণের মনে প্রশ্ন, তবে কি খালেদা জিয়া মৃত্যুভয়ে তার আসল জন্মদিনের কথা এত দিন প্রকাশ করেননি?
সব খুললে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন
করোনার মধ্যে সব কিছু চালু হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ রাখা হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলেন ফখরুল। বলেন, ‘তাদের কাজই হচ্ছে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় চলছে ফিরছে কিন্তু শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই খুলছে না। অর্থাৎ দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে শিক্ষা না পায় সে ব্যবস্থাই তারা করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘টিকার মজুত না থাকলেও গণটিকা কার্যক্রমের ঘোষণাসহ প্রতিনিয়িত মিথ্যাচার করে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’
সব ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি মহাসচিব বলেন, ‘এই ঘটনায় জিয়াউর রহমানকে নিয়ে তো প্রশ্নই উঠতে পারে না। এ হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের লোকেরাই জাড়িত।’