বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বরিশালের ঘটনা ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ: ফখরুল

  •    
  • ২০ আগস্ট, ২০২১ ২২:৪৩

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শুধু বরিশাল না, অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি যে, প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের একটা সংঘর্ষ হচ্ছে, সংঘাত হচ্ছে। এটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ।’

বরিশালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব ওই ঘটনাকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন যেহেতু আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ জন্য এখন নির্বাচিত প্রতিনিধি বলতে তারা যা বোঝাচ্ছে সেই ধরনের লোকগুলোর সঙ্গে প্রশাসনের সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়েছে।’

শুক্রবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ব্যানার অপসারণ নিয়ে বুধবার রাতে ইউএনও মু‌নিবুর রহমানের সঙ্গে সি‌টি করপোরেশনের প্রশাস‌নিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের কথা-কাটাকা‌টি হয়।

প্রশাস‌নিক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বিবাদে জ‌ড়িয়ে পড়েন।

আনসার‌ সদস্যদের সঙ্গে হাতাহা‌তি শুরু হলে আওয়ামী লী‌গ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালান। আনসার সদস্যরা গু‌লি ছুড়লে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন আহত হন।

সংঘর্ষের পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে পু‌লিশ অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আবার ইউএনওর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় পু‌লিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

এমন ঘটনা এর আগেও অনেক জায়গায় হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শুধু বরিশাল না, অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি যে, প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের একটা সংঘর্ষ হচ্ছে, সংঘাত হচ্ছে। এটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ।’

সংঘর্ষের ওই ঘটনা প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। গত রাতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের এক বিবৃতিতে বরিশালের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর গ্রেপ্তার দাবি করা হয়।

এই বিবৃতিতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে আবার তুমুল আলোচনা তৈরি করেছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও তার অনুসারীদের ‘দুর্বৃত্ত বাহিনী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে একজন নির্বাহী কর্মকর্তা কীভাবে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের দ্বারা হেনস্তা হয়েছেন।’

সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে যেটা প্রয়োজন, আমাদের নেতা যিনি নির্বাসিত অবস্থায় বহু দূরে অবস্থান করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমাদের নেত্রী তিনি এখন পর্যন্ত বন্দি অবস্থায় আছেন।

‘তাকে মুক্ত করা, নেতাকে দেশে ফিরিয়ে আনা। দেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করা। সেই লক্ষ্যে আমাদের আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'

আওয়ামী লীগকে দানবের সঙ্গে তুলনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করেতে হবে। আমাদের একটা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই শক্তিকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

‘তাদের বাধ্য করতে হবে একটি নিরপেক্ষকালীন সরকারের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের। সত্যিকার অর্থে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন হতে পারে, একটি পার্লামেন্ট গঠন হতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে।’

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান সরকার কোনো গণতান্ত্রিক নর্মসে বিশ্বাস করে না। তারা মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে না। তারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করে না।

‘শুধু তারা নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য উদার রাষ্ট্রের যেসব ব্যবস্থা তাকে ধ্বংস করে দিয়ে জনগণের মাথার ওপর চেপে বসে আছে।’

করোনা মোকাবিলায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ‘সরকারের ব্যর্থতার কারণে করোনাকে এখানে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। আজকে অর্থনীতি নিচের দিকে যাচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না, মানুষ দরিদ্র থেকে আরও দরিদ্র হচ্ছে এবং অর্থনীতি আরও ধীরে ধীরে রসাতলের দিকে যাচ্ছে।’

বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। ‘ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ’-এর সভাপতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খানের পরিচালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, স্মৃতি সংসদের এম সিরাজুল হক, রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সুলতান মাহমুদ বাবু, নিলোফার চৌধুরী মনি, ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, ওয়ারেস আলী মামুন, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এম তোজাম্মেল হোসেন, শামসুজ্জামান মেহেদীসহ বক্তব্য রাখেন আরও অনেকে।

ভার্চুয়াল এই আলোচনায় ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের স্ত্রী মাহমুদা সালাম, একমাত্র মেয়ে সালিমা বেগমসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর