সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবর্তে রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এ কাজের জন্য স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানের দোসরদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বসিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগরভবনে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস করে দেয়ার পাশাপাশি প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এনে স্বাধীন দেশের লাল-সবুজের পতাকা ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাধীনতার সুফল যেন বাঙালির না পায় সে চেষ্টাই করে গেছে বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধীরা।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে দেখেন রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা, ব্যাংক-বীমাসহ সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
‘খাদ্য-অন্ন-বস্ত্রহীন দেশের সাত কোটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করেন দেশ গঠনের কার্যক্রম। এক বছরের মধ্যে ব্যাংক-বীমা, পুলিশ, বিডিআর, আনসার, কোট-কাচারিসহ সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সংগঠিত করেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন বাংলার মাটি ও মানুষ দিয়ে উন্নয়নের শ্রেষ্ঠতম আসনে যাওয়া সম্ভব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠন হওয়ার সময় মাথাপিছু আয় ছিল ৫৯ ডলার। পাকিস্তানের ২৫ বছরের শাসনামলে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছিল ১২৫ ডলারে। জাতির পিতা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৮৯ ডলার। ধ্বংসস্তূপ দেশ হাতে পাওয়ার পরেও মাত্র সাড়ে তিন বছরে মাথাপিছু আয় ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন বঙ্গবন্ধু।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে শহীদ করে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেয় স্বাধীনতা বিরোধীরা। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর বাঙালির ভাগ্যের আর কোনো উন্নতি হয়নি। জিয়াউর রহমান সামরিক পোশাক পরে রাজনৈতিক দল গঠন করে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে তাজুল ইসলাম জানান প্রতিটি ওয়ার্ডকে দশটি সাবজোনে ভাগ করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে ডে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রিলিফ বিতরণ, করোনা, ডেঙ্গুসহ সকল সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য কাউন্সিলদের নির্দেশ দেন তিনি।
এই কমিটিগুলোকে সক্রিয় রাখলে যেকোনো সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে নগরভবনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। এছাড়া সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররাও উপস্থিত ছিলেন।