কাবুল বিমানবন্দরের পরিস্থিতি টেনে দেশের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কক্ষে দুই দফায় পাঁচটি তালা লাগিয়েছে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বুধবার দুপুর দেড়টায় ছাত্রলীগ এবং বিকেল পৌনে ৫টায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এর আগে শহীদ মিনারের সামনে এক সমাবেশ থেকে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আসিফ নজরুলকে গণধোলাই দিয়ে পাকিস্তানে পাঠিয়ের দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
আসিফ নজরুল আইন বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোতাহার হোসেন ভবনের ১২৩ নম্বর কক্ষ আইন বিভাগের চেয়ারম্যানের জন্য বরাদ্দ। সে কক্ষেই তালা লাগানো হয়েছে। তালা লাগানোর পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষের দরজায় বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ফেস্টুনও সাটিয়ে দেয়।
এসব ফেস্টুনে লেখা ছিল, ‘জঙ্গিবাদের মদদদাতা এবং দেশদ্রোহী আসিফ নজরুলের বিচার চাই।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহীদ মিনারের সামনে দুপুরে ছাত্রলীগের একটি সমাবেশ ছিল। সমাবেশ শেষে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী ভবনের উত্তর পাশের গেইট দিয়ে ঢুকে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের নেতৃত্বে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বিকেল পৌনে ৫টায় আইন বিভাগে প্রবেশ করে। এসময় তারা এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে তার কক্ষে তালা লাগায়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কুশপুতুলও পোড়ায় তারা। সেখান থেকে ঘোষণা দিয়েই সংগঠনটির প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী তালা লাগাতে আসে।
আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা লাগানোর বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। কেন, কী কারণে তালা দেয়া হয়েছে তা বিস্তারিত জেনে অবগত করানোর জন্য আইন অনুষদের সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে আসিফ নজরুল নিউজবাংলাকে বলেন, ’আমি এমন কোনো কাজ করিনি, যার কারণে তালা দেয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা কেন এটি করেছে আমি বুঝতে পারছি না। আর আমার সেই স্ট্যাটাসে শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে। এখানে কারো সংক্ষুব্ধ হওয়ার মতো কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।’