তালেবান যোদ্ধাদের আবারও আফগানিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তাদের দ্রুত সমর্থন দিতে এবং সহযোগিতা করতে সরকারকে তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
বুধবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ‘করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণের চলাচল সচেতন করা ও মাস্ক বিতরণ’ শুরুর আগে এসব কথা বলেন জাফরুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে যেকোনো মুক্তির আন্দোলনকে সমর্থন দিতেন। এটা মনে রাখতে হবে যে, তালেবানরাও মুক্তিযোদ্ধা। তারা বিদেশি শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। তারা যাতে কট্টরবাদী, ইসলামের নামে ধর্মান্ধতা না করে তার জন্য দ্রুতই তাদের সমর্থন এবং সাহায্য করা প্রয়োজন।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবারও এক অনুষ্ঠানে তালেবান যোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেন জাফরুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, তালেবানরা করেছে অন্যান্যের বিরুদ্ধে। তারাও মুক্তিযোদ্ধা, আমরাও যেমন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। কাজেই অন্য দেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরও শ্রদ্ধা করা শিখতে হবে, তাদের সিরিয়াসলি নিতে হবে।
‘শেখ সাহেব কিন্তু বলে গিয়েছিলেন, যেখানেই মুক্তির আন্দোলন হবে তাদেরকে আমরা সমর্থন করব। এটা সংবিধানেও লেখা আছে। আমরা যদি এখনই তাদের স্বীকৃতি দিই, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারি তাহলে তাদের আমরা প্রভাবিত করতে পারব।’
ফার্মগেটের অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং টিকা ইস্যুতেও কথা বলেন জাফরুল্লাহ। ছোঁয়াচে এই ভাইরাস রুখতে সবাইকে মাস্ক পরার আহ্বান জানান তিনি।
সরকার রাশিয়া থেকে কেন করোনারোধী টিকা কিনছে না সে প্রশ্ন তুলে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘রাশিয়া ভ্যাকসিনের দাম কম হওয়ার পরও কেন কিনছে না, তার জবাবদিহি নাই। সরকার একের পর এক ভুল করে চলছে; গণতান্ত্রিক সরকার না হলে যা হয়।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেন। আর ধানাইপানাই কইরেন না। আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছেন কেন। যখন আন্দোলন হবে, তো হবেই, কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেশের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না।’
জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনজীবন সচল রাখার আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। এ সময় সরকারের কাছে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করেন তিনি।
বক্তব্য শেষে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে নাগরিক সমাজের নেতারা ফার্মগেট হতে তেজগাঁও রেলগেট রাস্তায় পথচারীদের মাঝে মাস্ক ভিতরণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, নাট্য পরিচালক শেখ রুনাসহ আরও অনেকে।