বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপিকর্মীদের ইট-পাটকেলে আহত ডিসি-এডিসি-ওসি

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২১ ১৩:৩১

তেঁজগাও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ আঘাত পেয়েছেন কানে, মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল আঘাত পেয়েছেন পায়ে এবং শেরে বাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি আঘাত পেয়েছেন শরীরের বিভিন্ন অংশে।

রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে তিন কর্মকর্তাসহ পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন একজন উপকমিশনার ও একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্যানে জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতারা। তার মিনিট দশেকের মধ্যে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।

প্রায় আধা ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ সময় বাহিনীটির অন্তত পাঁচজন আহত হন। এর মধ্যে রয়েছেন তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা হলেন তেঁজগাও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ, মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল ও শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।

ওসি জানে আলম নিউজবাংলাকে জানান, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছোড়া ইটে তিনি নিজে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। ডিসি শহীদুল্লাহ আঘাত পেয়েছেন কানে এবং এডিসি সজল আঘাত পেয়েছেন পায়ে। আর গুরুতর আহত দুই পুলিশ সদস্যকে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

সংঘর্ষের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপির কর্মীরা জিয়ার সমাধিতে ফুল দিতে এসে অনেক ভিড় ও হুড়োহুড়ি করছিলেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের শৃঙ্খলভাবে ও কম লোক নিয়ে সমাধি জিয়ারত করার অনুরোধ করা হয়েছিল।

‘তখনই তারা বিশৃঙ্খলা শুরু করে দেন। আমাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারেন, হামলা চালান। তখন বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করি। এখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তারা শান্তভাবে মাজার জিয়ারত করছেন। তবে বিএনপির কর্মীরা যাবার সময় রাস্তায় কিছু গাড়িও ভাঙচুর করেছেন।’

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপিরও বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তেজগাঁও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান টগর (৪৬) ও আবুল কালাম (৬২) নামে এক কর্মী। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ নেতার সহকর্মী ফারুক বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতা-কর্মীরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যান। নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে কবর জিয়ারত করতে এলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে পুলিশ হঠাৎ রাবার বুলেট ছোড়ে এবং নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেয়। পরে আমাদের অনেক নেতা-কর্মী পুলিশের গুলিতে আহত হন। আমরা দুজনকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে এসেছি।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে এসেছেন। এখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।’

এ ছাড়া আহত হয়েছেন সাবেক ফুটবলার ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম।

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত এক বিএনপিকর্মী। ছবি: নিউজবাংলা

জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট জটলা বেঁধে চন্দ্রিমা উদ্যানে আসা শুরু করেন। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে বেশ কিছু মিছিল ও মোটরসাইকেলের শোডাউন এসে থামে চন্দ্রিমা উদ্যানের গেটে।

এ সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়। পুলিশ সদস্যরা বলেন, করোনার সময় জটলা করা যাবে না। ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই।

তার কিছুক্ষণ পরই পেছন থেকে কিছু নেতা-কর্মী পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশও তখন লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রায় আধা ঘণ্টা এই সংঘর্ষ চলে।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান কর্মীদের নেতৃত্ব দিয়ে বলতে থাকেন, ‘আমাদের লাশ ফেলে দিলেও আজ আমরা জিয়ার মাজারে যাবই। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

এমন কথায় পিছিয়ে যাওয়া নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে জিয়ার সমাধির দিকে এগোতে থাকেন।

পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বেশ কিছু নেতা-কর্মী আশপাশে দৌড়ে চলে গেলেও আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে বাকি নেতা-কর্মীরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়ে জিয়ার সমাধিতে ঢুকে পড়েন।

সাবেক ফুটবলার ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা অনুমতি নিয়েই কর্মসূচি অনুযায়ী মাজারে যেতে চেয়েছি, কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়। নেতা-কর্মীরা ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা অতর্কিত হামলা করে।’

এ সময় আমিনুলের বাঁ কানের পাশ দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। তিনি জানান, পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হয়েছেন।

জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আমানউল্লাহ আমান। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি, যত লাশই ফেলুক, তাও আমরা আমাদের প্রিয় নেতার মাজারে আসব, ফুল দেবই। আর আমরা সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পেরেছি। এখন আমি মারা গেলেও শান্তি। গুলি করে মেরে ফেললেও আমার আফসোস নেই। আমরা ঐক্যবদ্ধ।’

এ বিভাগের আরো খবর