রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতারা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নেতা-কর্মীরা জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান। তার মিনিট দশেকের মধ্যে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।
এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায়। তাদের দমাতে মারমুখী হয় পুলিশও।
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানে আলম মুন্সি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির একটা প্রোগ্রামে হঠাৎ ঝামেলা শুরু হয়েছে। আমরা আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।’
জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট জটলা বেঁধে চন্দ্রিমা উদ্যানে আসা শুরু করেন। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে বেশ কিছু মিছিল ও মোটরসাইকেলের শোডাউন এসে থামে চন্দ্রিমা উদ্যানের গেটে।
এই সময় পুলিশ নেতা-কর্মীদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়। পুলিশ সদস্যরা বলেন, করোনার সময় জটলা করা যাবে না। ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই।
তার কিছুক্ষণ পরই পেছন থেকে কিছু নেতা-কর্মী পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশও তখন লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রায় আধা ঘণ্টা এই সংঘর্ষ চলে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান কর্মীদের নেতৃত্ব দিয়ে বলতে থাকেন, ‘আমাদের লাশ ফেলে দিলেও আজ আমরা জিয়ার মাজারে যাবই। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
এমন কথায় পিছিয়ে যাওয়া নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে জিয়ার সমাধির দিকে এগোতে থাকেন।
পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বেশকিছু নেতা-কর্মী আশপাশে দৌড়ে চলে গেলেও আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে বাকি নেতা-কর্মীরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়ে জিয়ার সমাধিতে ঢুকে পড়েন।
সাবেক ফুটবলার ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা অনুমতি নিয়েই কর্মসূচি অনুযায়ী মাজারে যেতে চেয়েছি, কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়। নেতা-কর্মীরা ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা অতর্কিত হামলা করে।’
এ সময় আমিনুলের বাঁ কানের পাশ দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। তিনি জানান, পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হয়েছেন।
জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আমানউল্লাহ আমান। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি, যত লাশই ফেলুক, তাও আমরা আমাদের প্রিয় নেতার মাজারে আসব, ফুল দেবই। আর আমরা সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পেরেছি। এখন আমি মারা গেলেও শান্তি। গুলি করে মেরে ফেললেও আমার আফসোস নেই। আমরা ঐক্যবদ্ধ।’
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কিছু নেতা-কর্মী আহত হন। এর মধ্যে ঢাকা কলেজের ছাত্রদলের নেতা শিশির ও তিতুমীর কলেজের ছাত্রদলের আহ্বায়ক প্রার্থী এমদাদ গুলিবিদ্ধ হন। তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।