বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান খুনি ও বিশ্বাসঘাতক ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা ক্রমাগতভ বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে অস্বীকার করে আসছেন। তারা একজন খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা চালান। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জিয়া ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। এই খুনির দলের রাজনীতি যারা করেন তারা বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অস্বীকার করেন।’
বিএনপি নেতাদের খুনি ও বিশ্বাসঘাতকের রাজনীতি ছাড়ার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির সামনে জিয়ার মুখোশ উম্মোচন করা হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে যদি সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা চালু করতে হয়, ইতিহাস ও রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে হয়, তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
‘একইসঙ্গে যারা বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে খাটো করে দেখে এবং বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায় তাদেরও রাজনীতি এদেশে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতকের পক্ষে যারা রাজনীতি করেন, তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারতে মহাত্মা গান্ধি, পাকিস্তানে কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জজ ওয়াশিংটনের ভূমিকাকে খাটো করে কেউ কি রাজনীতি করতে পারবে, পারবেনা। কিন্তু আমাদের দেশে পারে।’মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়া অনেক বেশি পশ্চাৎপদ দেশ ছিল। আশির দশকের শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ার ছাত্ররা বাংলাদেশে পড়তে আসতো। সিঙ্গাপুর তখন জেলে পল্লি থেকে আস্তে আস্তে উন্নতির চেষ্টা করছে।
‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হতো তাহলে স্বাধীনতার ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দুর্নীতি আর দুঃশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রগতির চাকাকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আগে আমরা বলতাম ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ রচনা করতে। এরই মধ্যে ক্ষুধাকে আমরা জয় করেছি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনার শুরুতে কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী ও টকশোবিদ যারা রাত ১২টার পর টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন, তাদের অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, দেশে হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে। তাদের সেই শঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি এই খেটে খাওয়া মানুষের দেশে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি করোনার টিকা নিয়ে কত কুৎসা ও অপপ্রচার চালাল, পরে আবার নিজেরাই টিকা নিল। বিএনপি মনে করেছিল আমরা টিকা সংগ্রহ করতে পারবোনা। গণটিকা কার্যক্রম যখন শুরু হয়েছে তখন তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন পাকিস্তানিরা তাকে বিদ্রোহী বলে আখ্যায়িত ও অভিযোগ গঠন করতে পারেনি। তখন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকা থেকে রাওয়ালপিন্ডি হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট দিয়েছিল, শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছেন। আমাদের তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিলনা।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্য দেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মহিউদ্দিন রাশেদ, সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য আবুল কাশেম চিশতি, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী বাহার, ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউল আলম লাভলু, ইঞ্জিনিয়ার মো. হারুন, প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল ও উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ।