রাজনৈতিক প্র্রতিহিংসার কারণে ইতিহাসকে বিকৃত ও নিকৃষ্ট মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করবার অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এই ধরনের অপপ্রচার প্রকৃত সত্যকে আড়াল করবার একটা অপচেষ্টা মাত্র।
শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
এছাড়া পদ্মার সেতুর পিলারে বারে বারে ধাক্কার ঘটনা রোধে আগেই ফেরির রুট পরিবর্তন করা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে শুক্রবার জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ সাংবাদিকদের জানানো হয়।
সম্মেলনে গত ১২ আগস্ট আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আইনমন্ত্রী ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে স্বাধীনতা ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তমকে জড়িত করবার হীন চেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা মনে করে শুধু রাজনৈতিক প্র্রতিহিংসার কারণে ইতিহাসকে বিকৃত ও নিকৃষ্ট মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করবার অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এই ধরনের অপপ্রচার প্রকৃত সত্যকে আড়াল করবার একটা অপচেষ্টা মাত্র।
সভায় এ ধরনের নিকৃষ্ট মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকবার আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, মহামারি নিয়ন্ত্রণের এলেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু খুনি যাদের সাজা হয়েছে, কেবল তারা এককভাবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা নয়। এর পেছনে একটা ষড়যন্ত্র আছে। ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশের সিদ্ধান্ত সরকার ইতিমধ্যে নিয়েছে।’
‘এই তদন্ত কমিশনের রূপরেখো কী হবে? এই কমিশনের কার্যাবলী কী হবে এবং এই কমিশনটা কাদের নিয়ে গঠিত হবে। এই জিনিসগুলো করোনাভাইরাসের প্রকোপটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা দেখতে পাবেন।’
এছাড়াও এই সম্মেলনে পদ্মা সেতুতে বার বার ফেরির ধাক্কা লাগা নিয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এটা কমসেন্সের ব্যাপার। ফেরি চালাতে পারছে না। এখন তীব্র স্রোত পদ্মায়। এটা তো আর ছোট-খাটো নদী না। সেই পদ্মার স্রোতের এই ধরনের ফেরি কিছুটা ডাইভারটেড হবেই। ওখান থেকে রুটটা সরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত ছিল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওদের (সরকার) আবার সুবিধা আছে। ভেঙে অবশ্যই নতুন করে ফেরিঘাট বানানোর চেষ্টা করবে। অনেক টাকা যোগাড় করার সুযোগ পাবে। হ্যাঁ আপনার এই যে, বুড়িগঙ্গার ওপর প্রথম ব্রিজ যেটা ওটা নাকি জাহাজ যেতে গিয়ে ভেঙে গেছে। এখন নাকি আবার রিপ্লেস করা হবে। আবার কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রজক্টে হবে। এরকম প্রজেক্টই ওদের দরকার।’
গত শুক্রবার মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটগামী ‘ফেরি কাকলি’ পদ্মাসেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। এর আগে গত ৯ আগস্ট ‘বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর’ ও গত ২৩ জুলাই আরেকটি ফেরি পদ্মাসেতুর পিলারে আঘাত করে।
বার বার পদ্মাসেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কার বিষয়টিতে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে বলে সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন।
এই বিষয়ে দৃষ্টি আাকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওনারা তো এটাই দেখবেন (হাসতে হাসতে)। রানা প্লাজার ঘটনা আপনাদের মনে থাকার কথা। তখন মহিউদ্দিন খান আলমগীর সাহেবের মতো একজন শিক্ষিত মানুষ বললেন যে, বিএনপি নাকি ঝাঁকি নিয়ে রানাপ্লাজাকে ফেলে দিয়েছে।’