করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সরকার আমলাদের বসিয়ে রেখে বেতন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফারুল্লাহ চৌধুরী। একই সঙ্গে তাদের রাস্তায় নামিয়ে সচেতনতা তৈরির কাজে লাগানোরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘সব আমলাকে রাস্তায় নামান। তাদের সচেতনতার কাজে ব্যবহার করুন। তাদের বসিয়ে বসিয়ে আর কতদিন বেতন খাওয়াবেন?’
বুধবার রাজধানীর কাওরান বাজারে পেট্রোবাংলার সামনে আয়োজিত ‘করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণের চলাচল সচেতন করা ও মাস্ক বিতরণ’ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ক্ষতির দিকে যাচ্ছে। মৃত্যুর হার যা প্রকাশিত হচ্ছে তা থেকে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ডেঙ্গু। প্রতিদিন কয়েক শ লোক হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
‘আজকে অনেক মানুষের মশারি নাই। হাসপাতালে রোগীদের মশারি দেয়া হয় নাই। সরকার বক্তৃতা দিচ্ছে, মিথ্যাচার করছে, একে অপরকে দোষারোপ করছে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, এসব বাগাড়ম্বর না করে সত্য কথাটা বলেন।’
গণটিকা কার্যক্রমে হওয়া বিশৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এভাবে করোনার বিস্তার আরও বাড়ছে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আহ্বান জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে শিক্ষার্থীরা মানুষকে সচেতন করতে পারত। আপনাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরে না। যারা পরে তারা মুখে লাগায় না, গলায় ঝুলিয়ে রাখে।’
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য লিফলেট বিলি করেন। একই সঙ্গে তারা তিন দফা দাবিও তুলে ধরেন।
এগুলো হলো-
১. শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা। দ্রুততম সময়ে টিকা সংগ্রহ ও দেশের ১৩ কোটি নাগরিককে টিকা দেয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা করা। টিকা ক্রয়ে স্বচ্ছতা রাখা। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা রূপরেখা ও প্রয়োজনীয় তহবিল ঘোষণা করা।
২. আড়াই কোটি নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ওষুধের দাম ও চিকিৎসা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা।
৩. সারা দেশে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করে জীবন-জীবিকা সচল রাখা।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেএসডির কার্যকরী সভাপতি সা কা ম আনিছুর রহমান খান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর নেতা আলী আকবর খান, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জাহিদুরসহ অনেকে।