বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝুঁকি নিয়েও সিরামের টিকা নিইনি: রিজভী

  •    
  • ৯ আগস্ট, ২০২১ ১৪:০২

রিজভী বলেন, ‘আমি যেটা বলেছিলাম ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন নেব না এবং নিইনি। আমাকে চার মাস কোভিডে ভুগতে হয়েছে। এখন আমি মডার্নার ভ্যাকসিন নিয়েছি। কারণ সেটা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চার মাস ভুগলেও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিষয়টাকে কথা রাখা হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

গাজীপুর মহানগর বিএনপি কর্তৃক চিকিৎসা ও সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম যে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন নেব না। কারণ বিশ্বের অনেক দেশ ও সংস্থা সেই ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দেহ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। সে সময় বলা হয়েছিল যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন কার্যকর কি না তা দেখার জন্য বাংলাদেশে ট্রায়াল করা হবে।

‘সে জন্যই মানুষের মনে আরও সন্দেহ বেড়ে গিয়েছিল। কেননা সেই ভ্যাকসিন আসলেই ভালো না মন্দ সেটা কোনো স্বীকৃতি তখনও মেলেনি। ফলে আমি করোনার ঝুঁকি নিয়েও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন নিইনি।’

বাংলাদেশে প্রথম করোনারোধী টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সিরামের টিকা দিয়ে। এই টিকার ওপরই নির্ভর করছিল সরকার। সিরাম থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা কেনার জন্য চুক্তিও হয়েছিল। পরে চুক্তি অনুযায়ী, দুই দফায় ৭০ লাখ দিলেও বাকি টিকা আর দিতে পারেনি সিরাম। কেনার বাইরে ভারত সরকার এই টিকার ৩২ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে বাংলাদেশকে।

শুরু থেকেই সিরামে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ঘোর বিরোধী ছিল বিএনপি। এক অনুষ্ঠানে রিজভীই বলেছিলেন, এই টিকা দিয়ে বিএনপিকে মারতে চায় সরকার।

দলের সমালোচনা উপেক্ষা করেই সিরামের টিকা নেন বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খালেদা জিয়ার আইনজীবী দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল ফারুকসহ আরও অনেকে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা রিজভী নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মডার্নার টিকা। বিএনপির এই নেতার টিকা নেয়া নিয়ে সম্প্রতি এক বক্তব্যে টিপ্পনী কাটেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী চোখেও কম দেখেন, কানেও কম শোনেন। তথ্যমন্ত্রী ও অন্যরা আমাদের বক্তব্য ভালোভাবে শোনেননি।’

রিজভী বলেন, ‘আমি যেটা বলেছিলাম ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন নেব না এবং নিইনি। ফলে ওই টিকা না নিয়েই আমাকে চার মাস কোভিডে ভুগতে হয়েছে। এখন আমি মডার্নার ভ্যাকসিন নিয়েছি। কারণ সেটা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।’

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘তারা শুধু পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আজকে করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের কথা বলা হচ্ছে। অথচ বাইরে রাস্তায় গেলে দেখবেন যানবাহন যেন স্বাভাবিকভাবেই চলছে। আসলে গণতন্ত্রহীন গণবিরোধী সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে এসব সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে।’

সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আসলে ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন আওয়ামী সরকার কোনো সময়েই ন্যায়নীতির তোয়াক্কা করেনি। তারা শুধু লোপাট করেছে। যে কারণে আজকে ঢাকাসহ গ্রামেগঞ্জে মানুষ করোনার চিকিৎসা পাচ্ছে না। সেসব এলাকায় আইসিইউ বেড, অক্সিজেন ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীর প্রচণ্ড সংকট দেখা দিয়েছে। এসবের কারণ হলো সরকারের একটি সিন্ডিকেট স্বাস্থ্য খাতের টাকা লোপাট করেছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দলের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মী করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে সাধ্যমতো সহায়তা করছে।

‘এটাও আওয়ামী লীগের সহ্য হচ্ছে না। তারা আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। তারা নানাভাবে, নানা রঙে নানা কৌশলে আমাদের কর্মকাণ্ডকে ঢাকার ষড়যন্ত্র করছে’- বলেন রিজভী।

করোনায় সারা দেশ বদ্ধভূমিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হবে গোটা দেশ যেন গোরস্থানে পরিণত হয়েছে। অথচ অনেক দেশ যেমন ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, নেপালসহ আরও কয়েকটি দেশ জনগণকে বাঁচাতে কত দ্রুত মানবিক পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের অবৈধ সরকার তা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আজকে মানুষ মারা যাচ্ছে।’

গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. সালাউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অংশ নেন সদস্য সচিব মো. সোহরাব উদ্দিন, মো. শওকত হোসেন সরকার, সদস্য রাশেদুল হকসহ আরও অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর