তীব্র সমালোচনার মুখে পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এক নেতাকে।
অব্যহতি পাওয়া খাইরুল ইসলাম রাজাকারের ছেলে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও যুগ্ম আহ্বায়ক সজিব মালিথা।
পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সা. সম্পাদকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার দুপুরে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে খাইরুলের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঈশ্বরদীর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, দীর্ঘ ১২ বছর পর গত ৩১ জুলাই তিন মাসের জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০ সদস্যের এই কমিটিতে মাসুদ রানাকে আহ্বায়ক ও সজিব মালিথাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
দলে অনুপ্রবেশের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, ঘোষিত কমিটির ৮ নম্বর সদস্য খাইরুল ইসলাম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ঈশ্বরদীর চিহ্নিত রাজাকার শহরের মশুড়িয়া পাড়ার (ভাটাপাড়া) এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে হৈচৈ পড়ে যায়। তারা বিষয়টি ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা এবং স্থানীয় এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাসের দৃষ্টিতে এনে প্রতিকার দাবি করেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা জানান, কমিটিতে খাইরুল ইসলামের নাম আসায় চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়। রোববার দুপুরে খাইরুলকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ পাবনা জেলা কমিটি।
কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সজিব মালিথা জানান, দীর্ঘদিন পর তড়িঘড়ি করে কমিটি ঘোষণা করায় দলের মধ্যে হাইব্রিডদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। খাইরুল ইসলাম মৃত রাজাকার আবুল হোসেনের পুত্র জানার পর তাকে পাবনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ পাবনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ‘ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক এক মেয়রের সুপারিশে রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলাম কমিটিতে এসেছে। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঈশ্বরদীতে কমিটি দেয়া আমাদের ভুল হয়েছে। রাজাকারের ছেলে কমিটিতে থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।’
ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা জানান, খাইরুল ইসলাম রাজাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। রাজাকারের ছেলে আওয়ামী লীগের সংগঠনে ঢুকে পড়ায় দলের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এক কুচক্রী দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে এভাবে স্বাধীনতাবিরোধীর ছেলেকে দলে প্রবেশ করিয়েছে।’
পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, শুধু আবুল হোসেন রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলামই আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেনি। ঈশ্বরদীতে অনেক রাজাকারের ছেলেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ-পদবি দখল করেছে।
আওয়ামী লীগ থেকে রাজাকার পরিবারের সদস্যদের বহিষ্কার করতে তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র থাকতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।