ঢাকা মহানগরে বিএনপির যে দুটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে ছোটখাটো সমস্যা থাকতে পারে বলে স্বীকার করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে যাদের নেতৃত্বে রাখা হয়েছে তারা সবাই যোগ্য বলে মনে করেন তিনি।
রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় মঙ্গলবার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। যখন একটি কমিটি তৈরি করা হয়, তখন ছোটখাটো সমস্যা থাকতেই পারে। তবে এবার পরীক্ষিত নেতাদের নিয়েই কমিটি করা হয়েছে। প্রবীণ এবং নবীনের সমন্বয়ে করা হয়েছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে ঢাকা উত্তরের ৪৭ সদস্য এবং আবদুস সালামের নেতৃত্বে দক্ষিণের ৪৯ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি সোমবার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
উত্তরের সদস্যসচিব হয়েছেন আমীনুল হক এবং দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু।
নতুন কমিটি নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘দুটি কমিটিই গঠন করা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে। এই কমিটির প্রতি সারা দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। নেতাদের সবাই পরীক্ষিত।’
দলের আন্দোলনে নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বলে আশা করছেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতির একটা গুণগত পরিবর্তন আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
‘অগণতান্ত্রিক একটি সরকার আমাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা বিনষ্ট করে দিচ্ছে। নতুন নেতারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমিকা রাখবেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ভূমিকা রাখবেন।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া বিএনপি নেত্রীর সাজা পরে বেড়ে হয় ১০ বছর। পরে আরও একটি মামলায় তার হয় সাত বছরের কারাদণ্ড।
তবে ২০২০ সালের মার্চে দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর খালেদা জিয়া কারাগার থেকে দুই শর্তে বাসায় ফেরেন। ছয় মাসের জন্য তাকে মুক্ত করা হলেও পরে আরও দুই দফায় মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও ছয় মাস করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি অত্যন্ত সক্রিয় থেকে দলকে সুসংগঠিত করবে এবং একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
কবে নাগাদ কাউন্সিল হতে পারে, এমন প্রশ্ন তিনি বলেন, ‘আমাদের যে গঠনতন্ত্র আছে, সে অনুযায়ী কাউন্সিল হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তরের নতুন আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্র অনুপস্থিত, একদলীয় শাসন চলছে। নির্যাতন-নিপীড়ন ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। আমরা একযোগে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কাজ করব। যদি প্রয়োজন হয় ১৯৯০ সালের মতো গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারকে সরানো হবে।’
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা।’
তাবিথ আউয়াল, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মোহাম্মদ মোহন, আতিকুল ইসলাম মতিন, মোশাররফ হোসেন খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এস এম জাহাঙ্গীর, শায়রুল কবির খানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।