বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভুঁইফোঁড়দের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

  •    
  • ১ আগস্ট, ২০২১ ০৮:৩৮

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বললেন, ‘এ ধরনের সুবিধাবাদী লোকদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তাদের আমরা নিরুৎসাহিত করেছি আগেও। এটা নিয়ে আগেও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে এটি নিয়ে আমরা পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটিতে হয়তো আলোচনা করব।’

আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে যেসব ভুঁইফোঁড় সংগঠন গড়ে উঠেছে, সেগুলোর সঙ্গে জড়িত দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

এ নিয়ে দলের পরের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন তারা।

নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে বাংলাদেশ চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠন। এটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নাম আসে হেলেনা জাহাঙ্গীরের। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় মাহবুব মনিরকে। তাদের নাম-সংবলিত পোস্টারে ছেয়ে যায় ফেসবুক।

পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। সংগঠনটির দাবি, দুই-তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে এটি। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

এ নিয়ে গত ২৩ জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা। পরের দিনই হেলেনাকে দলের মহিলাবিষয়ক উপকমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়। আর তাকে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদ থেকে আরও আগেই বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।

শনিবার রাতে হেলেনার গুলশানের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে ‘উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অবৈধ পন্থা, অপকৌশল ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়ার’ অভিযোগ আনা হয়।

চাকরিজীবী লীগের বিষয়টি সামনে আসার পর আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে পরিচালিত অন্তত অর্ধশত সংগঠনের নাম পাওয়া যায়। এদের অনেকেই নিজেদের সাংগঠনিক প্যাডে কার্যালয়ের ঠিকানা হিসেবে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ব্যবহার করেছেন, যেটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, এদের সাথে দলটির কোনো সম্পর্কই নেই।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হচ্ছে যুবলীগ, মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও মৎস্যজীবী লীগ। জাতীয় শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগ হলো দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। আর মহিলা শ্রমিক লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ আওয়ামী লীগের ‘নীতিগত’ অনুমোদিত সংগঠন।

তবে নামের সঙ্গে ‘লীগ’ শব্দটি যুক্ত করে সংগঠন পরিচালনা করছে অন্তত অর্ধশত সংগঠন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশ ইলেকট্রিক লীগ, নাপিত লীগ, ফকির লীগ, প্রবীণ লীগ, ডিজিটাল লীগ, রিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগ, আওয়ামী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী লীগ, ছিন্নমূল হকার্স লীগ ইত্যাদি।

আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে এই সংগঠনগুলো আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে আসছে। নামের সাথে আওয়ামী লীগের নাম থাকায় দলটি সম্পর্কে মানুষের মনে নেতিবাচক ধারণাও জন্মাচ্ছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও সম্প্রতি তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, এসব সংগঠনের সাথে আওয়ামী লীগেরই কিছু অসাধু নেতার জোগসাজশ রয়েছে। তারা ব্যক্তিগত লাভের আশায় সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছেন, যা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।

এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা আওয়ামী এবং লীগ শব্দ ব্যবহার করে বিভিন্ন সংগঠনের নাম তৈরি করে নিজেদের প্রচারণা করে ধান্দাবাজি শুরু করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে ব্যাপারে প্রশাসন তৎপরও হয়েছে।

‘এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরও অনেকের বিরুদ্ধে দ্রুতই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

একই সঙ্গে এসব সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় এ নেতা। হানিফ বলেন, ‘ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ের পরে এটা বলা যাবে। এ বিষয়টি আমরা সব সময় নিরুৎসাহিত করি।

‘হঠাৎ করে এসে কেউ যেন দলে স্থান না পায়, এ ধরনের সুবিধাবাদী লোকদের যারা আশ্রয় দেয় প্রশ্রয় দেয়, তাদের আমরা নিরুৎসাহিত করেছি আগেও। এটা নিয়ে আগেও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে এটি নিয়ে আমরা পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটিতে হয়তো আলোচনা করব।’

দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আগেও আমরা করেছি। ভবিষ্যতেও আমরা এটা দেখব, যদি কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করে সেটাও দেখা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর