গত এক যুগে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের দাবিকে এক বাক্যে ‘মিথ’ তথা পৌরাণিক গল্প বলে উড়িয়ে দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এই মূল্যায়নের কথা বলেন।
বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী জাতীয় উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ‘ব্যক্তি খাত বিকাশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মুক্তবাজার অর্থনীতি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
ফখরুল বলেন, `আজ সরকার কী করেছে? একটা মিথ তৈরি করতে চায়। মিথটা কী? যে সাউথ ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটা রোল মডেল মধ্য আয়ের দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। ইটস এ টোটালি একটা মিথ ছাড়া কিছু না।
‘তারা গোয়েবলসীয় পদ্ধতিতে প্রচার-প্রচারণার মধ্য দিয়ে আজকে সেই কথাটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।’
‘কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা কী? বাস্তব অবস্থাটা হচ্ছে, এখন এ দেশে প্রায় ৬ কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে। বাস্তব অবস্থাটা কী? আজকে করোনার যে আঘাত এসছে, সেই আঘাত সহ্য করতে পারছে না বাংলাদেশ, অর্থনীতি সহ্য করতে পারছে না। আজকে আরও দুই কোটি লোক নতুন করে দরিদ্র হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে কিছু লোক লুটের মধ্য, দুর্নীতির মধ্য দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ দরিদ্র থেকে আরও দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে ব্যাংকিং সেক্টারকে ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার, শেয়ার মার্কেটকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানি লন্ডারিং এমন পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে যে এখন সরকার নিজে বলছে যে, এটা নিয়ন্ত্রণ করার দরকার, দুদক চেষ্টা করছে।
‘দুর্ভাগ্য আমাদের এই কয়েক দিন আগে দেখলাম দুদকের যিনি সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন, তার নামেও দুর্নীতির অভিযোগ চলে এসছে।’
দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ দেশ
ফখরুল বলেন, ‘গোটা দেশে এখন দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং আওয়ামী লীগের সরকার আজকে সেটা তৈরি করেছে।
‘সেই ১৯৭৫ সালে যে উদ্দেশ্য ছিল যে, বাংলাদেশকে একটা নতজানু দেশ হিসেবে পরিণত করবে, পরনির্ভরশীল অর্থনীতি হিসেবে তৈরি করবে, সেই উদ্দেশ্যে তারা (সরকার) কাজ করে যাচ্ছে।
‘আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে একটা পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করতে চাচ্ছে।’
বিএনপির কী করণীয়
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মাথা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ আছেন, তাকে মুক্ত করতে হবে, এ দেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে হবে।’
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন।