করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোন সমাধান নয় বলে মত দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গণটিকা কর্মসূচি জোরদার ও সংক্রমণ প্রবণ এলাকায় ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
বিবৃতিতে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোন সমাধান নয়। করোনার গণটিকা কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে হবে। পাশাপাশি সংক্রমণ প্রবণ এলাকায় করোনা চিকিৎসায় ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে।’
জি এম কাদের জানান, ‘আমাদের দেশের বাস্তবতায় লকডাউন সফল হবে না। লকডাউন চলছে কিন্তু মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
‘বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার জরিপ বলছে, করোনায় ১ বছরে দেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবনমান নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে গেছে। আর আগে থেকে দরিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন আরও সাড়ে ৩ কোটি মানুষ। বেশীর ভাগ দরিদ্র মানুষের ঘরে খাবার নেই, পকেটে ওষুধ ও শিশুখাদ্য কেনার টাকা নেই। এ ধরনের মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা।’
বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে যে সাহায্য দেয়া হচ্ছে তা একদিকে অত্যন্ত অপ্রতুল এবং একইসঙ্গে এর একটি বড় অংশ প্রকৃত দরিদ্রদের হাতে পৌঁচ্ছাছেনা। তাই আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোন সমাধান দিতে সফল হচ্ছে না।
‘লকডাউন চলছে কিন্তু প্রতিদিন সরকারি হিসেবেই প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন এখন দুইশর ওপরে। সাধারণ মানুষের ধারণা এই সংখ্যা হয়তো আরও বেশি। আক্রান্ত ও মৃত্যুহার ঊর্ধ্বগামী এবং কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। ফলে বাস্তবে লকডাউনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।
‘লকডাউনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও খেটে খাওয়া মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। প্রতিদিন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে তাদের আহাজারি। সে কারণেই গণটিকা জোরদার করে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই জনগণের জীবনে স্বস্তি আসবে ও জীবন রক্ষা পাবে।’