অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, অনিয়মকারীদেরকে দল অতীতে প্রশয় দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না।
বুধবার নিজ বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার এবং আওয়ামী লীগ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করেছে। অনেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান এবং তদন্তাধীন। আবার কারো সাজাও হয়েছে। দল কখনও অনিয়মকারীদের প্রশ্রয় দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না।’
ওবায়দুল কাদের জানান, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল রাজনৈতিক সংগঠন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এ সংগঠনের বিস্তৃতি। অনেকসময় দলে অনুপ্রবেশকারীরা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালায়। এসব কর্মকাণ্ড নজের এলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় শুধু সাংগঠনিক নয়, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও নজির রয়েছে। যার উদাহরণ সাম্প্রতিককালে সাহেদ, পাপিয়াসহ অনেকের ক্ষেত্রে দল অত্যন্ত কঠোর অবস্থান দেখিয়েছে।’
‘অনেকে অনেক কথাই বলেন, কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকাকালে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে দলের নেতাকর্মী এমনকি জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যে কঠোরতা আওয়ামী লীগ দেখিয়েছে তা অতীতে দেশের কোন রাজনৈতিক দল দেখাতে পেরেছে কী?’-যোগ করেন কাদের।
করোনার চলমান কঠিন পরিস্থিতিতে সবাইকে জনগণের জন্য রাজনীতি করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলমত নির্বিশেষে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হার প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে বেশি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এমন বাস্তবতায় মানুষের জীবনের সুরক্ষাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। জীবন রক্ষা না পেলে জীবিকা দিয়ে কী হবে?
‘অনেকে লকডাউন শিথিলের কথা বললেও এমন সংকটকালে জীবনের সুরক্ষাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাই মনে রাখতে হবে কারো কারো অবহেলায় পরিস্থিতি ক্রমে অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’
দেশের মানুষের সুরক্ষায় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার প্রতি আস্থা রাখতেও সবার প্রতি আহ্বান জানান কাদের। বলেন, ‘ব্যাপকহারে সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন প্রদানকেই সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। দেশে ভ্যাকসিনের কোনো সংকট নেই, মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে চূড়ান্ত করা হয়েছে ভ্যাকসিন রোডম্যাপ।
‘দুর্যোগ ও সংকটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জনমানুষের আস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনমানুষের আস্থা পূরণে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং করোনার এ সংকটে তিনি বিনিদ্র রজনীও যাপন করছেন। জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী সিদ্ধান্তে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো অবস্থায় রয়েছে।’
দেশের উন্নয়ন-অর্জন ও সমৃদ্ধিতে যারা লাভবান হয়েছেন তাদেরকে চলমান সংকটে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘করোনার এ সংকটে আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিট অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তসমূহ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাশাপাশি দলের উপকমিটি ও সহযোগী সংগঠনগুলো সক্রিয়তার সঙ্গে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’