বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কঠোর লকডাউনে’ সংসদ সদস্যের হাওর বিলাস

  •    
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ১৫:৪৯

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মন চেয়েছে তাই ঘুরতে গিয়েছি। সেখানে একজন অসুস্থ রোগীকেও দেখতে গিয়েছিলাম।’

কঠোর বিধিনিষেধ আমান্য করে হাওর ভ্রমণ করেছেন ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন। আর সেই ভ্রমণের ছবি তিনি নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

ছবিতে দেখা গেছে সংসদ সদস্যের সঙ্গে গাড়িতে গাদাগাদি করে বসে আছেন সাতজন। তাদের কারও মুখেই মাস্ক নেই। এই ভ্রমণের বিষয়ে এমপি তুহিন নিউজবাংলাকে বলেন, মন চেয়েছে তাই ঘুরতে গিয়েছি।

সারা দেশে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশে চলছে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে সড়কে চলাচল করতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অহেতুক বের হওয়া মানুষদের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত মামলা দিয়ে জরিমানার আওতায় আনছে।

ঠিক সেই মুহূর্তে একজন সংসদ সদস্যের কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে হাওর ভ্রমণ নিয়ে ফেসবুক ছাড়াও মানুষের মুখে চলছে নানা আলোচনা।

ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন শনিবার (২৪ জুলাই) ফেসবুকে ব্যক্তিগত আইডি থেকে মাইক্রোবাসে করে কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর ভ্রমণের তিনটি ছবি পোস্ট করেন তিনি।

পোস্টে এমপি লিখেছেন- ‘আমাদের জীবনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আনন্দ ভ্রমণ অনেক কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ, তাই বাড়ীর কাছে কিশোরগঞ্জের বিশাল জলরাশি উপভোগ করতে যাচ্ছি, সঙ্গে আমার পরিবার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পরিবার, যুবনেতা সোহেল, ছাত্রনেতা ফয়সাল, সালাম, রয়েল, রাজু, সাইমুন ও বিডিআর রুহুল।’

সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পোস্টে লাইক পড়েছে দুই হাজার। কমেন্ট পড়েছে তিন শতাধিক। এখানে দলীয় কিছু নেতা-কর্মী শুভ কামনা জানালেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে।

মাহমুদুল হাসান মিশাদ নামে একজন লিখেছেন, ‘লকডাউন এবং সরকারের বিধিনিষেধ আমান্য করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আপনি ৷ আপনি জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি এমন আইন ও নিয়ম ভাঙেন তাহলে আমরা যারা সাধারণ জনগণ তারা তো সরকারের এমন আইন ও নিয়মকানুন না মানাটাই স্বাভাবিক।’

আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম পিন্টু নামে একজন কমেন্ট করে বলেছেন, ‘এই ত নেতা। রাজনীতি তুহিন ভাইয়ের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে।’

এই কথার পাল্টা জবাব দিয়ে মাহবুবুল আলাম নামে আরেকজন বলেছেন, ‘হুম কঠোর লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোটাও শিক্ষণীয় ও প্রশংসনীয়।’

জিকরুল হাসান জিকু নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনারা জনপ্রতিনিধিরা নিজেরাই লকডাউন মানেন না, শুধু শুধু জনগণের ওপর হয়রানি।’

নান্দাইল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম আহমদ খান লিখেছেন, ‘ভাই আমাদের পৌরসভার মেয়রকে নিলে পুরোটাই সুন্দর হত। আমাদেরকে নাইবা নিলেন, আমরাও আপনার একটি অংশ ভাই। শুভ কামনা রইল।’

জহিরুল ইসলাম জীবন নামে এক যুবক বলেছেন, ‘আজ থেকে তো লকডাউন। আমি দরকারি কাজে কিশোরগঞ্জ গেছিলাম। ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হইছে...তাইলে কী...?’

ময়মনসিংহের নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ-এর আহ্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‘কঠোর বিধিনিষেধ চলা অবস্থায় পরিবার এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে একজন সংসদ সদস্যের হাওর ভ্রমণ খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তারা আইনপ্রণেতা হয়ে আইন ভঙ্গ করলে সেটা সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয় না। সেই আইন সাধারণ মানুষ মানতেও চায় না।

‘আইনপ্রণেতারা যদি আইন ভাঙেন তাহলে তাদের যারা অনুসরণ করেন তারা কী করবেন। সাধারণ মানুষকে আইন মানাতে জনপ্রতিনিধিদেরই বড় ভূমিকা থাকতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মন চেয়েছে তাই ঘুরতে গিয়েছি। সেখানে একজন অসুস্থ রোগীকেও দেখতে গিয়েছিলাম।’

লকডাউন উপেক্ষা হওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এ বিভাগের আরো খবর