মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর পরামর্শে চাকরিজীবী লীগের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে হেলেনা জাহাঙ্গীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নাকচ করেছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। বলেছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে তৈরি করা এ সংগঠনে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা মনোনয়নের বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচিত হয়ে ওঠা ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগে কীভাবে এলেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। নেতা-কর্মীরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলের তদবিরেই আওয়ামী লীগের উপকমিটিতে জায়গা পান হেলেনা।
চাকরিজীবী লীগ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে হেলেনা জাহাঙ্গীর দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের পরামর্শেই তিনি চাকরিজীবী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।
সম্প্রতি নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠন। এটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নাম আসে হেলেনা জাহাঙ্গীরের। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় মাহবুব মনিরকে। তাদের নাম-সংবলিত পোস্টারে ছেয়ে যায় ফেসবুক।
পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। সংগঠনটির দাবি, দুই-তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ নিয়ে শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা। পরের দিনই হেলেনাকে দলের মহিলাবিষয়ক উপকমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়। আর তাকে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদ থেকে আরও আগেই বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
পদ হারানোর পর শনিবার নিজের মালিকানাধীন আইপি টিভি ‘জয়যাত্রা টেলিভিশনে’ হেলেনা জানান, তিনি এখনও ওই সংগঠনটির দায়িত্ব নেননি। তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তাকে দায়িত্ব নিতে বলেছেন। এ সময় নিজের উপদেষ্টা হিসেবেও আ ক ম মোজাম্মেল হকের কথা তুলে ধরেন তিনি।
হেলেনা জাহাঙ্গীর কীভাবে আওয়ামী লীগে এলেন, জানতে চাইলে দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে উনি (হেলেনা) তো কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সদস্য। আওয়ামী পরিবারের হিসেবেই আমি জানি। ওনার জয়যাত্রা একটা মিডিয়া আছে যেটার সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী (আ ক ম মোজাম্মেল) মহোদয়ও আছেন।
‘তিনি (আ ক ম মোজাম্মেল) আমাদের জেলা (গাজীপুর) আওয়ামী লীগের সভাপতি। যা হোক, ওনার (আ ক ম মোজাম্মেল) সাথে ভালোই জানাশোনা, সে হিসেবে ওনাকে (হেলেনা) উপকমিটিতে আমরা রেখেছিলাম।’
অবশ্য আ ক ম মোজাম্মেল হক বলছেন, চাকরিজীবী লীগ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তিনি।
তার পরামর্শে চাকরিজীবী লীগ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আ ক ম মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘না, কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমার পরামর্শে কেন করবে? চাকরিজীবী লীগ আমার পরামর্শে কেন করবে?
‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কত সংগঠন এ দেশে দাঁড়িয়ে গেছে, শত শত। এগুলো কে বা কারা করে এ বিষয়ে আমার সঠিক কিছু জানা নেই।’