আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ গঠন করে মূল সংগঠনের নারীবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীর বলেছেন, কিছু কুচক্রী মহলের কারণে তার কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিক হয়ে যাবে শিগগিরই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফায়েড অ্যাকাউন্টে রোববার ১০টা ১৮ মিনিটে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমি দলকে ভালোবাসি, আমি দলের সকল সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে নেত্রী আমাকে সাজা দিবেন এবং পরক্ষণে আগলে নিবেন আশা করি।
‘আমরা কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নই। তবে আমি এটা বিশ্বাস করি, আমার সকল কার্যক্রম ছিল দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে। কিন্তু কিছু কুচক্রী মহল আমার এই কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তবে মনে রাখবেন সূর্য অস্ত গিয়েছে; সঠিক সময়ে সূর্যের উদয় হবে ইনশা আল্লাহ।’
সম্প্রতি ফেসবুকে নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ছবি পোস্ট করে বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠন। নামসর্বস্ব এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনির। তাদের নামসংবলিত পোস্টারে ছেয়ে যায় ফেসবুক।
পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, দুই-তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ নিয়ে শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা।
নিউজবাংলার প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া স্ট্যাটাসে চাকরিজীবী লীগ গঠনের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
তিনি লেখেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আর সরকারের হাতকে শক্তিশালী করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশের আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ।
‘নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও এটি বেশ অনেক দিন ধরে কাজ করা একটি সংগঠন। এটির বয়স ৩ থেকে ৪ বছর। অনেক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে সারা বাংলাদেশব্যাপী। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলায় অফিসসহ কমিটি দেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে এই সংগঠনটির সদস্য লক্ষ লক্ষ। অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ব্যাংকার, বেসরকারি অনেক চাকরিজীবী এখানে আছেন।’
তিনি আরও লিখেন, ‘প্রচার-প্রচারণা নেই হয়তো এই জন্য অনেকের অজানা। কিছুদিনের মধ্যেই সবাই জেনে যাবেন। কারণ প্রতিদিন জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে আগামীর কার্যক্রম আলোচনা চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই এটি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিত সহায়তাকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।’
ওই সংগঠনের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের নারীবিষয়ক উপকমিটি থেকে হেলেনাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন দলটির নারীবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, দলের নিয়মনীতি ভঙ্গ করায় তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
চুমকি বলেন, ‘উনি তো কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সদস্য। আওয়ামী পরিবারের হিসেবেই আমি জানি। উনার জয়যাত্রা টেলিভিশন নামে একটা মিডিয়া আছে, যেটার সঙ্গে আমাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় আছেন। এই সুবাদেই উপকমিটিতে ওনাকে আমরা রেখেছি।
‘কিন্তু উনি কী করছেন…আমাদের না জানিয়ে করছেন। আমি ইতোমধ্যে আমাদের দপ্তরে জানিয়েছি, তাকে চিঠি দিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের উপকমিটিতে যেহেতু তিনি নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছেন, তিনি কী করছেন, আমাদের জানাননি, তার সদস্যপদ আমরা বাতিল করে দিয়েছি।’