সংগঠনের নামের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নাম যুক্ত করে নতুন সহযোগী সংগঠন গঠনের ঘোষণা দিয়ে দলের উপকমিটির সদস্যপদ হারানো হেলেনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ আগেই হারিয়েছেন।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন শনিবার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে জুন মাসেই ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির উপদেষ্টা সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তবে কী কারণে তা জানাননি রুহুল।
সম্প্রতি ফেসবুকে নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ছবি পোস্ট করে বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠন। নামসর্বস্ব এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনির। তাদের নামসংবলিত পোস্টারে ছেয়ে যায় ফেসবুক।
পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
সংগঠনটির দাবি, দুই-তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ নিয়ে শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা।
নিউজবাংলার প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া এক স্ট্যাটাসে চাকরিজীবী লীগ গঠনের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
তিনি লেখেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আর সরকারের হাতকে শক্তিশালী করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশের আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ।
‘নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও এটি বেশ অনেক দিন ধরে কাজ করা একটি সংগঠন। এটির বয়স ৩ থেকে ৪ বছর। অনেক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশব্যাপী। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলায় অফিসসহ কমিটি দেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে এই সংগঠনটির লাখ লাখ সদস্য। অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ব্যাংকার, বেসরকারি অনেক চাকরিজীবী এখানে আছেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘প্রচার-প্রচারণা নেই হয়তো এই জন্য অনেকের অজানা। কিছুদিনের মধ্যেই সবাই জেনে যাবেন। কারণ প্রতিদিন জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে আগামীর কার্যক্রম আলোচনা চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই এটি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিত সহায়তাকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।’
আওয়ামী লীগের নারীবিষয়ক উপকমিটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার খবর নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন দলের নারীবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘তিনি (হেলেনা) কোথা থেকে কী করেন, তার কোনো ঠিক নেই। যখন আমরা তাকে নিয়েছিলাম, তখন তো এটা জেনেই নিয়েছিলাম যে, আমাদের পরিবারের একজন সদস্য। এখন যদি তিনি নিজে নিজেই নেতা হয়ে যান, তাহলে আমরা কী করব?
‘আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানাননি। আমি জানার সঙ্গে সঙ্গে দপ্তর সম্পাদককে বলেছি, বন্ধ করে দেন তার সব কার্যক্রম।’
এ ব্যাপারে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি।