বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাকরিজীবী লীগ নিয়ে তোপের মুখে হেলেনা

  •    
  • ২৪ জুলাই, ২০২১ ১৬:২৫

সংগঠনটি প্রসঙ্গে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘তারা কী মনোনয়ন দেবে, তাদের নিজেদেরই মনোনয়ন আছে নাকি? নামের সঙ্গে আওয়ামী লীগ যোগ করলেই তা আওয়ামী লীগ হয়ে যায় না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

সংগঠনের নামের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নাম যুক্ত করে নতুন সহযোগী সংগঠন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।

বিভিন্ন সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে হেলেনার তোলা ছবি পোস্ট করে তার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।

সম্প্রতি ফেসবুকে নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ছবি পোস্ট করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠন। নামসর্বস্ব এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনির। তাদের নামসংবলিত পোস্টারে ছেয়ে যায় ফেসবুক।

পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, গত দুই-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

এ নিয়ে শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউজবাংলা।

নিউজবাংলার প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া এক স্ট্যাটাসে চাকরিজীবী লীগ গঠনের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।

তিনি লিখেছেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আর সরকারের হাতকে শক্তিশালী করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশের আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ।

‘নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও এটি বেশ অনেক দিন ধরে কাজ করা একটি সংগঠন। এটির বয়স ৩ থেকে ৪ বছর। অনেক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে সারা বাংলাদেশব্যাপী। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলায় অফিসসহ কমিটি দেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে এই সংগঠনটির সদস্য লক্ষ লক্ষ। অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ব্যাংকার, বেসরকারি অনেক চাকরিজীবী এখানে আছেন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘প্রচার-প্রচারণা নেই হয়তো এই জন্য অনেকের অজানা। কিছুদিনের মধ্যেই সবাই জেনে যাবেন। কারণ প্রতিদিন জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে আগামীর কার্যক্রম আলোচনা চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই এটি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিত সহায়তাকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।’

তার দেয়া এই স্ট্যাটাসে শনিবার দুপুর পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি কমেন্ট করা হয়েছে। আর রিঅ্যাকশন দেয়া হয়েছে দুই হাজার দুইশ। স্ট্যাটাসটি শেয়ার হয়েছে ১৩১ বার।

হেলেনা জাহাঙ্গীরের এই স্ট্যাটাস প্রকাশের পর তাতে সমালোচনামূলক নানা মন্তব্য করতে দেখা যায় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের। অনেকেই খালেদা জিয়া এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের ছবিও প্রকাশ করেছেন ওই স্ট্যাটাসে।

হেলেনা জাহাঙ্গীরের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস আলম লিখেছেন, ‘আওয়ামী রাজনীতিতে আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কী? অনেকে বলছেন, আপনি উড়ে এসে জুড়ে বসা লোক। আমরা তা বলতে চাই না, আপনি আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড তুলে ধরুন, সবাই জানুক আপনি হাইব্রিড না।’

জবাবে হেলেনা জাহাঙ্গীর লিখেছেন, ‘আমার সাথে থাকুন জেনে যাবেন।’

ফরিদ আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কি এতই দৈন্যদশা, চাকরিজীবী লীগ করতে হবে?’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। শাহেদ, সাবরিনা, পাপিয়া…এবার হেলেনা।’

নেতিবাচক এসব মন্তব্য নিতে না পেরে শনিবার বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে আবারও একটি স্ট্যাটাসে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে ছবি থাকার ব্যাখ্যা দেন হেলেনা।

ওই স্টাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি নেই? তাতে কি কিছু বোঝা যায়? আমরা কি অশিক্ষিত যারা এই ভুলগুলো করছি। সবাইকে জানানোর জন্যই বলছি, আমি আমার নেতা ও নেত্রীর কথার বাহিরে এক পা-ও আগাইনা, কাজও করি না।

‘যাদের যোগ্যতা নেই, তারাই মানুষের পিছনে লেগে থাকে, মানুষ সামাজিক জীব সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমাদেরকে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে যেতে হয়, একটা ছবি মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে না।’

তার এই স্ট্যাটাসেও কমেন্ট করে সমালোচনা করেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। তিন ঘণ্টায় এতে কমেন্ট পড়েছে ১৪ হাজার আর রিঅ্যকশন দেখিয়েছেন ১৮ হাজার মানুষ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হামজা রহমান অন্তর লিখেছেন, ‘আপনি ব্যবসায়ী, ব্যবসা করতেই এসেছেন। রাজনীতিও আপনাদের কাছে ব্যবসাই। আপনি যদি রাজনীতি করে এসে রাজনীতিবিদ হতে চাইতেন, তবে কখনোই বঙ্গবন্ধু কন্যার সাথে নিজের তুলনা করতেন না।

‘ভাত একটা টিপলেই হাঁড়ির সব ভাতের কোয়ালিটি টের পাওয়া যায়। আর বঙ্গবন্ধুর সৈনিক যদি হয়ে থাকেন, কোথায় ছিলেন ২০০১-১৩ সাল পর্যন্ত? নিশ্চয়ই বাচ্চাকাল ছিল না তখন। শিক্ষাদীক্ষা তো দূরের কথা, সামান্য লজ্জাশরম থাকলেও আবার গলাবাজি করতে আসতেন না। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া দলটার ওপর আপনাদের মতো দুর্বৃত্তরা অভিশাপ। এই দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যাই।’

খান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান নামে একজন লিখেছেন, ‘এখন বাংলাদেশে সবাই বড় আওয়ামী লীগার হয়ে গেছে, দলের জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত। যখন আওয়ামী লীগের দুর্দিন ছিল, তখন আওয়ামী লীগে ত্যাগী লোকের বড় অভাব ছিল। এমনকি ১৯৭৫-পরবর্তী আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করতেও অনেকে ভয় পেত।

‘এখন দেখা যায় দলের সুদিনে বসন্তের কোকিলদের অভাব হয় না। অনেক অরিজিনাল ত্যাগী পুরোনো আওয়ামী লীগাররা বঞ্চিত। অথচ ধান্ধাবাজ, মতলববাজ, চাটুকার, ফায়দা লোটাকারী, সুযোগবাদীরা অতি বড় আওয়ামী লীগার সেজে এখন আঙুল ফুলে কলাগাছ। এমন উদাহরণ বাংলাদেশে এখন দৃশ্যমান। অতএব বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র, কচুপাতার পানির মতো, ঝোপ বুঝে কোপ মারা এবং সুযোগ বুঝে বোল পাল্টাতে মোটেই সময় লাগে না।’

হেলেনা জাহাঙ্গীর এত কথা বললেও অবশ্য চাকরিজীবী লীগের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা কী মনোনয়ন দেবে, তাদের নিজেদেরই মনোনয়ন আছে নাকি? নামের সঙ্গে আওয়ামী লীগ যোগ করলেই তা আওয়ামী লীগ হয়ে যায় না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর