করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও কবে টিকা নিতে পারবেন সে বিষয়ে কোনো এসএমএস পাননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৮ তারিখে ম্যাডামের টিকার নিবন্ধন করা হয়। তিনি মহাখালীর ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে টিকা নেবেন।’
সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন ফরমে দেয়া মুঠোফোন নম্বরে খুদে বার্তার মাধ্যমে টিকা দেয়ার তারিখ জানানো হয়ে থাকে।
তবে এখন পর্যন্ত ওই এসএমএস পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে জেড এম জাহিদ বলেন, ‘না এখনও কোনো মেসেজ পাইনি। পেলে আপনাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় দিব।’
সাধারণত জনপ্রতিনিধি এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে আগে মেসেজ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে ছয় দিন হয়েছে গেলেও মেসেজ পাননি কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এত জেরা করতেছেন কেন? বললাম তো মেসেজ পাইলে আপনাদের সবার আগে জানাব। জেরা করবেন না কথায় কথায়।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দিকে নিবন্ধনের দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই তারিখ জানিয়ে এসএসএম করা হয়েছে। এখন যদিও চাপ বাড়ায় একটু বেশি লাগছে। তবে ভিআইপি ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে আগে তারিখ দেয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এখন তার বাসভবনে অবস্থান করছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এখনো খালেদা জিয়ার করোনা–পরবর্তী চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয় গত ১৪ এপ্রিল।
প্রথম দিকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেন তিনি। পরে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ৯ মে তাঁর করোনা পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ আসে।
তারপরও শারীরিক সমস্যা থাকায় প্রায় দেড় মাস তাকে হাসপাতালে থাকতে হয়। কিছুদিন সেখানকার করোনারি কেয়ার ইউনিটেও (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল বিএনপি নেত্রীকে।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তবে করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পর তার
আর্থ্রাইটিসসহ পুরোনো অনেকগুলো রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় সেগুলোর জটিলতা বেড়েছে। এর মধ্যে হার্ট, কিডনি ও লিভারে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে যখন অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকার প্রয়োগ শুরু হয়, তখন বিএনপির পক্ষ থেকে টিকা গ্রহণে ব্যাপকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। বাংলাদেশ তখন এই টিকা আসে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে।
বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এমনও বলেন যে, ‘সরকার করোনার টিকা দিয়ে বিএনপিকে মেরে ফেলতে চায়।’
বিএনপির দাবি ছিল, সরকার টিকা কিনেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির এই টিকা নিরাপদ নয় বলেই তাদের দাবি ছিল।
সিরাম আর টিকা পাঠাতে না পারার কারণে এখন সরকার চীনের সিনোফার্মের, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজারের টিকা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গণটিকা শুরু করেছে।