প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর দুই বছর পরও জাতীয় পার্টির মধ্যে এরশাদের ছায়া পুরোমাত্রায় বহাল। দলের নেতৃত্ব তার পরিবারের হাতে। শীর্ষ পদে রয়েছেন এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের। নেতৃত্বে আছেন এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ছেলে সাদ এরশাদও।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই এই দিনে ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির নেতারা মনে করেন, এরশাদ জনপ্রিয় ছিলেন এবং মৃত্যুর পরও তার জনপ্রিয়তা বজায় রয়েছে। এ কারণেই দলে তার প্রভাব টিকে আছে। তার ছোট ভাই ভালোভাবেই দল পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমীন হাওলাদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাইয়ের চেয়ে আপনজন আর কে হতে পারে? সুতরাং তার (জি এম কাদের) কাছ থেকেই মানুষ আশা করেন, প্রয়াত নেতার আদর্শ অনুযায়ী তিনি আমাদের দল পরিচালনা করবেন।’
এরশাদের মৃত্যুর পর জি এম কাদের দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট আছে, সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে তিনি (জি এম কাদের) এগিয়ে যাবেন। পরিবারের মধ্যে তিনি সেই দায়িত্ব নিয়েছেন।’
জাতীয় পার্টি সংসদে কতটুকু সত্যিকারের বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রাখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের সংসদ সদস্যরা বিরোধী দল হিসেবে ভালো ভূমিকা রাখছেন। স্বাস্থ্যনীতি, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সফলতা ব্যর্থতা নিয়েও কথা বলছেন। আমাদের দলের চেয়ারম্যানও তো কথা বলছেন।’
দলের মহাসচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এরশাদের দেখানো পথেই জাতীয় পার্টি এগিয়ে চলছে। এখনও আমরা সেই পথেই আছি। গত দুই বছরেও জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে, সুসংহত আছে। তিনি (এরশাদ) যাকে (জি এম কাদের) নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, তাকে দলের গঠনতন্ত্র মেনে দলীয় কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে বরণ করে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতার আদর্শ ছিল নতুন বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের অবকাঠানো উন্নয়ন এসব নিয়ে আমরা মানুষকে বলছি।’
এরশাদের মৃত্যুর পর কতটুকু এগুতে পেরেছেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকখানি এগিয়েছি। আমরা দলকে শক্তিশালী করতে পেরেছি।’
কর্মসূচি
করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে জাতীয় পার্টি ও এরশাদ ট্রাস্ট। এ ছাড়া ঘরোয়াভাবে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদও দিনটি পালন করছেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সারা দেশে প্রতিটি থানায় আমাদের নেতার স্মরণে বুধবার মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটির প্রতিটি থানায় ওনার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবেই আমরা দোয়া মাহফিল করব।’
জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক নিউজবাংলাকে জানান, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় টিম তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে রংপুর গিয়েছেন। বুধবার সকাল ১১টায় দলের কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এরশাদের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বুধবার দুপুর ১২টায় এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে ১০ হাজার মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের।