সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ ও টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করে সাধারণ মানুষকে জাতীয় পার্টিতে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
দেশের প্রধান অন্য দুটি দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে ‘মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ বলে অভিহিত করে তিনি বলেছেন, দেশের মানুষ আবারও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়।
মঙ্গলবার দুপুরে তার বনানীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানার নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দেখেছেন। দেশের কল্যাণে তারা কিছুই করতে পারেনি। তাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির পতাকাতলে শামিল হোন।’
‘আগামীতে জাতীয় পার্টির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে’ বলেই মনে করেন দলটির চেয়ারম্যান। তাই দলকে আরও শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন জি এম কাদের।
তিনি আরও বলেন, ‘৯০ সালের পর থেকে দুটি দলের ব্যবহারে মানুষ বিরক্ত হয়ে পড়েছে। তারা একবুক আশা নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের মানুষ আবারও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। ৯০ সালের পর প্রতিটি সরকারই জাতীয় পার্টির ওপরে আঘাত করেছে। কিন্তু মানুষের আস্থা ও ভালোবাসায় জাতীয় পার্টি এখনও মানুষের মাঝে টিকে আছে।’
এরশাদের প্রশংসা করে তার ছোট ভাই জি এম কাদের বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন গণমানুষের ভালোবাসায় জননন্দিত নেতা। অপবাদ দিয়ে তাকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেয়া যায়নি। প্রতিটি নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তার মৃত্যুর পরে চারটি জানাজায় মানুষের যে ঢল নেমেছে, তাতে প্রমাণ হয়েছে দেশের মানুষ কতটা ভালোবেসেছেন ওনাকে।’
দেশের চলমান লকডাউন নিয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘কখনোই এ দেশে লকডাউন সফল হবে না। কারণ দেশের বেশির ভাগ মানুষেরই ঘরে খাদ্য নেই, পকেটে পয়সা নেই। তাই খাদ্যসহায়তা না দিলে ক্ষুধার্ত মানুষ ঘরের বাইরে বের হবেই।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা লকডাউনের আগে দরিদ্র মানুষকে খাদ্যসহায়তা দিতে বলেছি। সদিচ্ছার অভাবে সরকার হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্যসহায়তা দেয়নি।’
সরকারের টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়েও সভায় কঠোর সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। বলেন, ‘টিকা কূটনীতিতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বের সব দেশ যখন করোনা টিকা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ফেলেছে, তখনও আমাদের করোনা টিকার পূর্ণ নিশ্চয়তা মেলেনি। মাস্ক পরে আর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।’
জি এম কাদের বলেন, করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এ অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। সময়মতো মানুষকে করোনার টিকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় করোনা পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে।’
জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা।