করোনার টিকা নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করেছেন তিনি।
তবে এখন পর্যন্ত তাকে টিকা দেয়ার তারিখ জানানো হয়নি। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম মহাখালীর ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে টিকা নেবেন।’
৯ জুলাই ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন ফরম পূরণ করেন খালেদা জিয়া। নিবন্ধন ফরমে উল্লিখিত মুঠোফোন নম্বরে খুদে বার্তার মাধ্যমে টিকা দেয়ার তারিখ জানানো হয়ে থাকে। তবে এখন পর্যন্ত ওই এসএমএস পাননি খালেদা জিয়া।
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে যখন অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকার প্রয়োগ শুরু হয়, তখন বিএনপির পক্ষ থেকে টিকা গ্রহণে ব্যাপকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। বাংলাদেশ তখন এই টিকা আনে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে।
বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এমনও বলেন যে, ‘সরকার করোনার টিকা দিয়ে বিএনপিকে মেরে ফেলতে চায়।’
টিকা নিলে মানুষ বাঁচবে কি না, এই ধরনের বক্তব্য একাধিকবার দেন তিনি। আর বিএনপির সমর্থকরাও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচার চালিয়ে আসছেন টিকা না নিতে।
বিএনপির দাবি ছিল, সরকার টিকা কিনেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির এই টিকা নিরাপদ নয় বলেই তাদের দাবি ছিল।
সিরাম আর টিকা পাঠাতে না পারার কারণে এখন সরকার চীনের সিনোফার্মের, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজারের টিকা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গণটিকা শুরু করেছে।
দেশে গণটিকা শুরুর আগে আগে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী টিকা না নিতে জনগণকে উৎসাহী করে নানা বক্তব্য রেখেছেন
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৪ দিন চিকিৎসার পর গত ১৯ জুন রাতে তিনি গুলশানের বাসায় ফেরেন। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও হাসপাতালে জীবাণু এবং দেশে করোনার ডেল্টা ধরনের সংক্রমণের মধ্যে ঝুঁকি এড়াতে খালেদা জিয়াকে বাসায় নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি বাসাতেই আছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এখনো খালেদা জিয়ার করোনা–পরবর্তী চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয় গত ১৪ এপ্রিল।
প্রথম দিকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেন তিনি। পরে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ৯ মে তাঁর করোনা পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ আসে।
এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হন। ওই মাসের শেষে তিনি ভর্তি হন হাসপাতালে। জুনের শেষে ফেরেন বাসায়
তারপরও শারীরিক সমস্যা থাকায় প্রায় দেড় মাস তাকে হাসপাতালে থাকতে হয়। কিছুদিন সেখানকার করোনারি কেয়ার ইউনিটেও (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল বিএনপি নেত্রীকে।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তবে করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পর তার
আর্থ্রাইটিসসহ পুরোনো অনেকগুলো রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় সেগুলোর জটিলতা বেড়েছে। এর মধ্যে হার্ট, কিডনি ও লিভারে সমস্যা তৈরি হয়েছে।