করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশব্যাপী শাটডাউন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই নিষেধাজ্ঞাকে অনেকটা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে সভা করলেন মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী।
স্থানীয় সংসদ সদস্যের আয়োজন, অথচ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দাবি, তিনি বিষয়টি জানতেন না। আর শাটডাউন কার্যকর করতে তৎপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, তিনি বিষয়টি জেনেছেন পরে। ততক্ষণে সভা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
রোববার বিকেলে উপজেলার বালাশুর আলম প্লাজার ভাগ্যকুল চাইনিজ অ্যান্ড পার্টি সেন্টারে ‘এসো রোজগার করি’ স্লোগানের একটি অনলাইন বিজনেস প্রোগামের ব্যানারে এ সমাবেশ হয়। এতে শতাধিক মানুষের সমাগম হয়।
সমাবেশের একটি ভিডিও সোমবার নিউজবাংলার হাতে এসেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে গাদাগাদি করে বহু মানুষ। সেখানে বক্তব্য রাখছেন মাহি বি চৌধুরী। তবে তার বক্তব্য স্পষ্ট বোঝা যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শাটডাউনে অকারণে বাড়ির বাইরে বের হলেই গ্রেপ্তার জরিমানা করছে পুলিশ। এই সময়ে বিয়ের আয়োজন করায় একাধিক এলাকায় হানা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জরিমানা করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জেই একটি বিয়ের আয়োজনে হানা দিয়ে সব খাবার দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সুনামগঞ্জে ভাড়া দেয়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারকে জরিমানা করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।
কঠোর বিধিনিষেধের বাইরে নয় মুন্সিগঞ্জ বা শ্রীনগরও। এর মধ্যে আইনপ্রণেতা হয়ে সরকারি আদেশ ভঙ্গ নিয়ে নানা কথা উঠেছে।
অনুষ্ঠানস্থল আলম প্লাজার সত্ত্বাধিকারী সামসুল আলম বলেন, ‘বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের দিকে এমপি মহোদয় আসার পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। তিনি ৪০ মিনিটের মতো সময় থেকেছেন। তিনি আসবেন তাই রেস্টুরেন্ট খোলা রাখতে বলেছিলাম।’
বিধিনিষেধের মধ্যে জমায়েতের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেদায়েতুল ইসলাম ভূঞা দাবি করেন, বিষয়টি তিনি জানেন না।
তিনি বলেন, ‘সাংসদ মহোদয়ের দায়িত্ব অনেক বেশি। যদি আমরা বিষয়টি জানতাম সেক্ষেত্রে তার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেত।’
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণব কুমার ঘোষও এই সভার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক, বিয়ে ও অন্যান্য সমাবেশ বন্ধ রাখতে জনসচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছি। সাংসদের সমাবেশের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। পরবর্তীতে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।’
আয়োজকদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যখন সমাবেশের বিষয়টি জানতে পারি তখন অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।’
আইনপ্রণেতা হয়ে সরকারি আদেশ ভঙ্গের বিষয়ে জানতে মাহী বি চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি।