বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খালেদা নিয়ে বক্তব্য রুচিহীন কল্পকাহিনি: ফখরুল

  •    
  • ৪ জুলাই, ২০২১ ১৭:৪০

‘গতকাল সংসদে সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা রুচিহীন ও কল্পকাহিনি ছাড়া আর কিছুই নয়। সংসদ নেতা তার মনগড়া কল্পকাহিনির মধ্য দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী এবং জনগণের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন।'

মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সংসার টিকিয়ে রাখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে যে বক্তব্য রেখেছেন, তার নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার প্রধানের বক্তব্যকে ‘রুচিহীন, কল্পকাহিনি, অনভিপ্রেত ও রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রোববার দুপুরে জুম নেটওয়ার্কে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।

আগের দিন সংসদে শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর জিয়াউর রহমান যখন বাংলাদেশে আসেন, তিনি তো বেগম জিয়াকে ঘরে নিতে চাননি। তার আরেকটা ঘটনা ছিল সেটা আমি জানি।

‘জিয়াউর রহমান ছিল কুমিল্লায়। তাকে উপসেনাপ্রধান করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং তার সংসারটা টিকিয়ে দেয়া হয়। সেটা করেছিলেন জাতির পিতা শেখ মুজিব।’

ফখরুল বলেন, ‘গতকাল সংসদে সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা রুচিহীন ও কল্পকাহিনি ছাড়া আর কিছুই নয়। সংসদ নেতা তার মনগড়া কল্পকাহিনির মধ্য দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী এবং জনগণের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন।’

জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের বক্তব্য সংসদ নেতার কাছ থেকে জাতি আশা করে না। এটা সমস্ত জাতিকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, সংসদ নেতার এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজির স্থাপন করেছে।'

খালেদার ক্ষমা চাওয়া বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের বাইরে যেতে চাইলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা একমাত্র সুযোগ বলে আইনমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তারও নিন্দা জানান ফখরুল।

জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে মন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘ঔদ্বত্যপূর্ণ, শালীনতা বিবর্জিত’ বলে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়েছে।

বিএনপি মনে করছে, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে না দিয়ে তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি দেয়া হয়েছে দুটি শর্তে। যার একটিতে বলা ছিল, তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

তবে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় বিদেশে নেয়ার আবেদন করা হয়, যেটি গত ৯ মে নাকচ করেছে সরকার।

গত ৩০ জুন জাতীয় সংসদে প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘ওনাকে (খালেদা) যদি বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়, তবে তাকে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে ৪০১ ধারায়। অবশ্যই তাকে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।’

ফখরুল বলেন,‘দেশনেত্রীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাসভবনে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনের কোথাও একথা বলা হয়নি যে, সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না।

‘যেখানে খুনের মামলায়, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি অথবা আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে, সেখানে এদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রেরর জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, জনগণের ভোটে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত তিন বার প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন, তাকে মানবিক কারণে চিকিতসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া যাবে না-এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।'

‘করোনা বিস্তারে দায়ী সরকারের ব্যর্থতা’

বিএনপি নেতার অভিযোগ, করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলার পেছনে সরকারের অযোগ্যতা, দুর্নীতি এবং ‍উদাসিনতা দায়ী। তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৫ মাস সময় নিযেও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।'

অপরিকল্পিত লকডাউন, সাধারণ ছুটি, সীমিত লকডাউন, কঠোর লকডাউনের ফলে প্রায় ২ কোটির ওপরে মানুষ দরিদ্র হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘কর্মচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক।’

দেশে ৫ কোটিরও বেশি প্রকৃত অর্থে কর্মহীন হয়ে গেছে দাবি করে তিনি, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, হকার, প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এক কালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান দেয়ার আহ্বান জানান।

ভারতের উজানের সব বাধ খুলে দেয়ার ১০ জেলায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ায় গভীরভাবে উদ্বেগও জানান ফখরুল।

বন্যা দুর্গত এলাকায় অবিলম্বে সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং বীজতলা ধবংস হয়ে যাওয়ায় নতুন বীজ সরবারহের দাবিও জানান বিএনপি নেতা।

দলের নেতা-কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপদ্রুত এলাকায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর