মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়ার দিনটি প্রথমবারের মতো স্মরণ করল বিএনপি। একটি অনলাইন আলোচনায় দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। তাই তারা বিষয়টি সামনে এনেছেন।
শুক্রবার বিকেলে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্যান্যরা।
১৯৭১ সালের আজকের দিনে মালিবাগের একটি বাসা থেকে খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেনানিবাসে নিয়ে যায়। যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর অধীনেই ছিলেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি যেহেতু আমরা আত্মপ্রচারে বিশ্বাস করি না, এত দিন পর্যন্ত কিন্তু এই দিনটিকে সেইভাবে আমরা সামনে আনিনি। কখন এনেছি? আজকে যারা ক্ষমতায়, ১২ বছর যাবৎ গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, আজকে যখন তারা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছরেরে ইতিহাসকে বিকৃত করে বর্তমান প্রজন্ম এবং দেশে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, তখন আমরা এই পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যারা ক্ষমতায় তাদের ভয় জিয়াউর রহমানকে নিয়ে, তাদের ভয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে, তাদের ভয় দুইজনের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমানকে নিয়ে। সে জন্য তারা একের পর এক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে।’
জার্মান পৌরাণিক গল্প হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার সঙ্গে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তুলনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়ে সেই হ্যামিলনের বংশীবাদক, যার বাঁশির সুরে সমস্ত মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসে… সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমাদের স্মরণ করাটা অত্যন্ত জরুরি আজকের পরিপ্রেক্ষিতে। আজকে সেই দেশনেত্রী কারাগারে, গণতন্ত্র আজকে কারাগারে।’
১৯৭১ সালে বেগম খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসে নেয়ার দিন স্মরণে বিএনপির ভার্চুয়াল আলোচনা
দেশে গণতন্ত্র নেই অভিযোগ করে এই অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে তরুণদের ‘জেগে ওঠার’ আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
বলেন, ‘বাংলাদেশকে যদি আমরা আগের জায়গা (গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনতে চাই, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন যদি পূরণ করতে চাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষা যদি পূরণ করতে চাই, শহীদ জিয়াউর রহমানের অসমাপ্ত কাজ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত কাজ যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই এবং দেশের মানুষের অধিকার যদি ফিরিয়ে আনতে চাই আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নাই।
‘তরুণদেরকে আহ্বান জানাতে চাই, সামনে এগিয়ে আসুন। আর সময় নেই। এখন জেগে উঠতে হবে। জেগে উঠতে হবে এবং দেশকে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে।’
বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুও এ সময় বক্তব্য রাখেন।