জঙ্গিরা গোপনে শক্তি বাড়াচ্ছে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি মনে করেন তাদের নীরবতা অন্য কোনো ভয়াবহ ঘটনার ইঙ্গিতও হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের বাসভবন থেকে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
তিনি বলেন, ‘হয়তো তারা অতিগোপনে তলে তলে তাদের শক্তিবলয় বাড়াচ্ছে। তাদের নীরবতা অন্য কোনো ভয়াবহ ইঙ্গিতও হতে পারে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে।’
পাঁচ বছর আগে গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার স্মৃতিচারণা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গুলশান হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে উগ্রবাদীদের তৈরি একটি দুষ্ট ক্ষত।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হলেও এই অপশক্তি একেবারে নির্মূল হয়েছে সেটি বলা যাবে না। দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় বিষফোঁড়া হয়ে আছে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ।’
২০১৬ সালে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র জঙ্গি। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হন ২২ জন। নিহতদের মধ্যে ১৭ জনই ছিলেন বিদেশি নাগরিক। এ ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি গভীর সংকটে পড়ে। অবশ্য পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে। এ তৎপরতায় জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়েছে বলে দাবি পুলিশের।
জনগণের সুরক্ষায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছানোয় জনগণের সুরক্ষায় শেখ হাসিনা সরকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রুখতে সরকার আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলার সময় অসুবিধা হলেও সেটি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ সময় অসহায়, কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং সামর্থ্যবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত কয়েক দিনে করোনায় ধারাবাহিকভাবে শতাধিক মৃত্যু এবং উচ্চমাত্রায় সংক্রমণ ভয়ানক অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এমন অবস্থায় সচেতনতা ও সতর্কতার সর্বোচ্চ ডিগ্রি অনুসরণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’
সম্প্রতি দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। এই বিধিনিষেধের মধ্যে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। সড়কে রিকশা ছাড়া সব ধরনের যান চলাচলেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘লকডাউনে অনেক অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ সংকটে পড়েছে, কিন্তু সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। কোনো অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, না খেয়ে থাকে এ জন্য শেখ হাসিনা সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে। ত্রাণসামগ্রী দিতে গিয়ে যাতে নিম্ন আয় ও ভাসমান মানুষ কোনোভাবেই বাদ না পড়ে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দলের নেতা-কর্মীদের যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।’
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে এবং শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
‘করোনা কাউকে ছাড় দেয় না। কোনো শ্রেণিভেদ মানে না। তাই দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে করোনা মোকাবিলা করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।’