শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত না করে লকডাউনের ঘোষণা শ্রমিক স্বার্থবিরোধী বলে মনে করেন ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ।
এই অংশের নেতারা বলেন, শ্রমিকদের রক্ত পানি করা শ্রমেই পুরো দেশের অর্থনীতি টিকে থাকে; মন্ত্রী, এমপি, আমলাদের বেতন হয়। তাদের শ্রম এবং রক্তের সঙ্গে বেঈমানি সুখকর হবে না।
বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতারা।
লকডাউনে শ্রমজীবী ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য রেশন চালু করাসহ চার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সংগঠনটির অন্য দাবিগুলো হলো, ঈদের আগে সকল শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা, সর্বস্তরের জনগণের জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা।
ছাত্র ইউনিয়নের এক অংশের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈমের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এই অংশেরই সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়।
ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মেঘমল্লার বসু বলেন, দেশের গরীব, মেহনতি মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করে লকডাউনের নামে বড়লোকের স্বার্থ রক্ষার পাঁয়তারা করছে সরকার। এর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে।
মেঘমল্লার বলেন, শ্রমিকের রক্ত আর ঘামের সঙ্গে বেঈমানী করবার পরিণতি সুখকর হবে না। একদিকে লকডাউন, শাটডাউনের ঘোষণা আর অন্যদিকে গার্মেন্টস, কারখানা খুলে রেখে মুনাফা ঠিক রাখবার ইন্তেজাম করা হচ্ছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী নামিয়ে চোখ রাঙানির আয়োজন তো আছেই। যে মানুষটি দিন আনে দিন খায়, তাকে যদি ৭ দিন ঘরে বসে থাকতে হয় তবে তার দুবেলা খাবার জুটাবে কে? পর্যাপ্ত রেশন হতে পারত এর সমাধান।
জনগণকে ক্ষুধার্ত রেখে লকডাউন সফল হবে না উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক তামজীদ হায়দার চঞ্চল বলেন, শ্রমিকদের রক্ত আর ঘামের সাথে বেঈমানী করার পরিণতি সুখকর হবে না। আমরা চাই, করোনার সংক্রমণরোধ করতে সরকার জনগণের জীবন-জীবিকাকে আমলে নিয়ে জনবান্ধর সিদ্ধান্ত নিবেন। রেশনের বন্দোবস্তের পাশাপাশি আসন্ন ঈদের আগে সব শ্রমিকের পাওনা বেতন ভাতা পরিশোধ করার কোনো বিকল্প নেই।
সভাপতির বক্তব্যে নজির আমিন চৌধুরী জয় বলেন, ‘করোনা মহামারীর সুযোগ নিয়ে মানুষের প্রতিবাদ করবার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পাঁয়তারা বারবার আমাদের সামনে দৃশ্যমান হচ্ছে। মতের অমিল হলেই আর অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
এসময় তিনি এই আইনকে নিবর্তনমূলক দাবি করে এটির বাতিল এবং এর আওতায় গ্রেপ্তার হওয়াদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
সমাবেশে শেষে ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন নেতারা। মিছিলটি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।