আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন তার ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা।
তিনি অভিযোগ করেন, বড় ভাই ওবায়দুল কাদের ও তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেছার অপরাজনীতি নিয়ে কথা বলায় তাকে শেষ করে দেয়া হচ্ছে।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে শনিবার বিকেলে লাইভে এসে তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকেও হত্যার হুমকি দেন।
তিনি বলেন, ‘আরে মারি আলাইবেন। আমি রেডি করি যামু। কারে রেডি করি যামু বলতে পারব না। সেগুলোর পারিবারিক দায়িত্ব নিয়ের বলি দিছি। তিনজনের নাম বলেছি। আমাকে মারলে, তিনজনকে মেরে ফেলবি। আপনে, আপনার বউ আর একরাম। তিনটা মারি ফেলবি।’
বড় ভাইকে উদ্দেশ করে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র বলেন, ‘তিনি আজকে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কী জন্য নিয়েছে, সেটাও খুঁজে পেয়েছি। আমি ওনার এবং ওনার স্ত্রীর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথাগুলো বলব। এত ন্যক্কারজনক, এত ছোট মানসিকতার ব্যক্তি। আমার আত্মীয়স্বজন এরই মধ্যে সবাইকে অর্থ দিয়ে মন্ত্রিত্বের প্রভাব খাটিয়ে আমার বিপক্ষে নিয়েছে।’
আব্দুল কাদের মির্জা বলেন, ঘরের শত্রু বিভীষণ। আজকে ঘরের শত্রু আমাকে শেষ করে দিচ্ছে। আপনি (ওবায়দুল কাদের) যেমন বাইরের কারও কারও সহযোগিতায় এখানে রাজনীতি করেন। আমরাও পিছিয়ে নেই। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি। চোখ রাঙাবেন না, মুখ সামলান, যা ইচ্ছা তা করবেন, হোতে পারে না।
একরাম ও নিজামকে কে নোয়াখালী-ফেনীর রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছে- এই প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বলেন, ‘আমার আব্বা কি রাজাকার ছিল। আপনি মেনে নিতে পারেন। আমি মেনে নিতে পারি না। আমি যদি বেঁচে থাকি এর প্রতিশোধ আমি নেব। আপনি পারবেন না। একরাম আজকে বলে, আমি ওবায়দুল কাদেরকে মাসোহারা দিই। নিশ্চয় কোথাও আপনার দুর্বলতা আছে।’
আর কখনও ভোট করবেন না জানিয়ে বসুরহাটের মেয়র বলেন, ‘আমি কোনো ভোটে দল থেকে নমিনেশন চাইলে জিহ্বা কেটে দিবেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব ৬-৭ জন ছাড়া এরা কি আমার বিরুদ্ধে যায়। সব আপনি নিছেন। আমার কাছে প্রমাণ আছে। আমি একটা একটা করে প্রমাণ করে দেব। না করতে পারলে হিজরত করুম।
‘আমি আপনার বিরুদ্ধে এমনে বলতেছি না। ভাই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কখন বলে। যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তখন বলে, এর আগে বলার সুযোগ থাকে না। আপনাকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন আপনার স্ত্রীর কারণে। কোথায় যান দেখবেন। এখানে মওদুদের শোকসভা বন্ধ করেছি, আপনার শোকসভায় কত লোক আসবে না, এটা দেখবেন। আপনি তো মারা গেলে দেখবেন না। আপনার স্ত্রী ও আপনার লোকজন দেখবে।’
কাদের মির্জা বলেন, ‘কী করবেন আমাকে? জেল দিবেন, দেন, অভ্যাস আছে। আমনেও রেডি অন, সময়মতো যাইবেন। আমনে আমারে ঢুকাবেন, আমনে বুঝি বাঁচি যাইবেন। আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র যখন গত পরশু দিন ধরা পড়ল। ট্রলারসহ আসছে মাল। র্যাব যদি সেখানে না যেত তাহলে হয়তো আজকে আমার জীবন বিপন্ন হতো।
‘সাতবার আমাকে মারার পরিকল্পনা করছে। আপনার কাছে কোনো বিচার পায় নাই। আমি প্রশাসনকে বলছি তারা টাকাপয়সা খাই সরে গেছে। এটা তো আমি বুঝি আপনি আমাকে মারতে চান। আপনার স্ত্রীকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, এটা স্পষ্ট। আমনে মারি পালাইলে মারি পালান।’
বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর নিজের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণার সময় দলীয় সংসদ সদস্যদের কঠোর সমালোচনা করে সারা দেশে আলোচনায় আসেন কাদের মির্জা। এরপর দফায় দফায় বড় ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন তিনি।