বর্তমান সরকার ‘পাকিস্তানি বাহিনী’র মতোই জনগণের অধিকার খর্ব করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন, তারা হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর মতোই মানুষের সমস্ত অধিকার খর্ব করছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। তাকে ধ্বংস করে দিয়ে মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে ভুলণ্ঠিত করে এক দলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা আজকে মানুষের ওপর অত্যাচার-জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।’
‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, বিএনপি সবসময় স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। রণাঙ্গনে যারা যুদ্ধ করেছে তাদের সংগঠিত দল। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা চেয়েছিল, যুদ্ধ করেছিলো সেই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য বিএনপি সংগ্রাম করছে, লড়াই করছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সেই সংগ্রাম ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে সফল হবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন এবং গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।’
স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে দেখতে পাই, সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার সত্য ইতিহাস বিকৃত করছে। তারা তাদের তৈরি করা ইতিহাস আজকে জাতির সামনে, পরবর্তি প্রজন্মের সামনে নিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘এদের (আওয়ামী লীগ) ঘটনাবলী দেখলে মনে হয় যে, এদেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধ কেউ করে নাই একমাত্র একজন ব্যক্তি ছাড়া। অথচ তিনি সেই দিন দেশেই ছিলেন না, পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। আওয়ামী লীগের এই সরকার আজকে একবারের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানী সাহেবের নাম উচ্চারণ করেন না, তারা সেই সময়ে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সাহেবের অবদানের কথা একবারের জন্য বলেন না, লক্ষ্ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা যারা সাধারণ মানুষ থেকে এসছিলো, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো তাদের কথা তারা উচ্চারণ করেন না।’
‘আর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দি্য়েছিলেন তাকে তারা খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য যত রকমের বিকৃত ইতিহাস আছে তার সেটার একটা ক্যাম্পেইন শুরু করেছে।'
বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তি উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফ্লাইট লেফট্যান্টে মতিউর রহমান বীরশ্রষ্ঠ-এর দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
স্বাধীনতা সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের কবর পাকিস্তানে ছিল। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেই সময়ে তার করবের দেহাবশেষ ঢাকায় ফিরিয়ে এনে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়। এই কাজটি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সফলভাবে করতে পেরেছিলেন বলে আজকে বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকে দেশের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরাস্থানে গিয়ে সন্মান জানাতে পারে।’
স্বাধীনতা সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ অন্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।