বাঙালির সব অর্জন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এসেছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ—এ দুটি নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন।’
সচিবালয়ে বুধবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব শতবর্ষে ‘আমাদের মুক্তি আমাদের স্বাধীনতা’ শীর্ষক হাওয়াইয়ান গিটারে ৫০ জন শিল্পীর দেশাত্মবোধক যন্ত্রসংগীতের অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পরই তখনকার ড্রয়িংরুমভিত্তিক রাজনীতি জনগণের কাছে যায়। প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ হলেও পরে মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।’
ইতিহাসে দৃষ্টিপাত করে তিনি বলেন, ‘১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো সংবিধান ছিল না। নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান রচিত হয়।
‘১৯৫২ সালে আমাদের ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠা হলেও প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা চালু হওয়া, ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ সবই শুরু হয় ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার পর।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা স্বাধীনতার লক্ষ্যে বাঙালির মনন তৈরি করেছিল বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের হয়েই অংশ নিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগ ধস নামানো বিজয় অর্জন করেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই অসহযোগ আন্দোলন এবং পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতাসংগ্রাম, স্বাধীনতা ঘোষণা, স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন। সে কারণেই আজকে বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনের সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম জড়িয়ে আছে।’
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল বলে বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “আজকে ২১শে ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’—এই গান এখন সারা পৃথিবীতে বাজানো হয়, জাতিসংঘ দিবস হিসেবে। সারা পৃথিবীতে বাজানো হয় বিভিন্ন ভাষায়।’’
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ খাদ্যঘাটতির দেশ আজ খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপ নেয়া, মাথাপিছু আয়ে ভারতকেও ছাড়িয়ে যাওয়া, সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানব উন্নয়ন—সব সূচকে পাকিস্তানকে অতিক্রম করা, করোনার মধ্যেও মাথাপিছু আয় বাড়া—সবই হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
বেতারের পাশাপাশি সকল টেলিভিশনেও হাওয়াইয়ান গিটারভিত্তিক অনুষ্ঠান প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পী পরিষদের ৫০ জন সদস্যের বাজানো একটি দেশের গানে ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পী পরিষদের সদস্য কবির আহমদ, শফিউল্লাহ খোকন, ফরহাদ আজিজ ও আব্দুর রউফ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।