বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শফীপুত্র আনাসের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হেফাজতের ডাক

  •    
  • ১৭ জুন, ২০২১ ১৭:৪২

‘আনাস মাদানীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হেফাজতেকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আমরা যদি তাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাই, তাহলে শফী হজুরের খুনিদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই।’

প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর ছোট ছেলে আনাস মাদানীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হেফাজতের ডাক দেয়া হয়েছে সংগঠনের কমিটি থেকে বাদ পড়াদের এক আলোচনায়।

এই অনুষ্ঠানে নিজেও উপস্থিত ছিলেন আনাস ও তার ভাই ইউসুফ মাদানী। তারা হেফাজতের আরেকটি শাখা খুলবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু না বললেও আলেমদের একতার ওপর জোর দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর জীবন, কর্ম, অবদান ও চলমান সংকট নিরসনে উলাময়ে কেরামের করণীয়’ বিষয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়।

সভায় সাভার মাদ্রাসার মুফতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আনাস মাদানীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হেফাজতেকে সংঘবদ্ধ করতে হবে। আমরা যদি তাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাই, তাহলে শফী হজুরের খুনিদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই।’

তিনি বলেন, ‘হেফাজতেকে হাইজ্যাক করে ভিন্ন কিছু করা যাবে না। এ ধরনের কাজ যারা করছে তারা ভুল পথে আছেন।’

আনাস মাদানী বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, আলেম সমাজ আজ ঐক্যবদ্ধ নয়। তাই সবাইকে ঐকবদ্ধ হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নানা পর্যায় থেকে কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে এবং আলেমদের আদর্শচ্যুত করার বহুবিদ ষড়যন্ত্র চলছে। এ পর্যায়ে আলেমরা যদি নীতি ও লক্ষ্যে অবিচল ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেন, তবে কোনো ষড়যন্ত্রই কওমি মাদ্রাসাশিক্ষার ক্ষতি করতে পারবে না।’

আল্লামা শফীর স্মরণে জাতীয় প্রেস ক্লাবের এই আলোচনায় আনাস ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তার বড় ভাই ইউসুফ মাদানী

এ সময় বক্তব্য রাখেন ইউসুফ মাদানীও। তিনি হেফাজতের নেতৃত্বকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ইসলামের কথা বলে তারা উল্টো কাজ করছেন। এ পথ থেকে তাদের ফিরে আসার আহ্বান জানাই।’

তিনি বলেন, ‘তারা (বাবুনগরী ও তার অনুসারীরা) যা করছেন, সেটা ইসলামের কাজ না। কারও পেছনে গীবত গাওয়াকে ইসলাম সমর্থন করে না।’

গত বছরের সেপ্টেম্বরে হেফাজতের সদর দপ্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় যে হাঙ্গামা হয়, তার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আনাসই। বিক্ষোভকারীরা তাকে হেফাজতে ও মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলে তার বাবা আল্লামা শফীকে অবরুদ্ধ করেন।

হাঙ্গামার তৃতীয় দিনে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান আল্লামা শফী। তবে তার আগেই আনাসকে সেই মাদ্রাসা ও হেফাজত থেকে বহিষ্কার করা হয়। এমনকি বাবার জানাজাতেও যেতে পারেননি আনাস।

শফীর মৃত্যুর ঘটনায় তার শ্যালক মঈন উদ্দিন একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন আর সেই মামলায় ৪৩ জনকে আসামি করে প্রতিবেদনও দিয়েছে পিবিআিই। সেখানে তার মৃত্যুকে ‘অবহেলাজনিত নরহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে গত মার্চের শেষে ও এপ্রিলের শুরুতে হেফাজতের সহিংসতার ঘটনায় সংগঠনের নেতৃত্বে এসেছে আমূল পরিবর্তন। বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক ধর্মভিত্তিক দলগুলোর যেসব নেতা হেফাজতের কমিটিতে ছিলেন, তাদের সবাইকে বাদ দেয়া হয়েছে। এমনকি শফীর বড় ছেলে ইউসুফ মাদানীকেও রাখা হয়েছে কমিটিতে। তবে ইউসুফ এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

গত নভেম্বরে জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ঘোষণা করে হেফাজতের যে কমিটি ঘোষণা করা হয়, তাতে শফীপন্থি সবাইকে বাদ দেয়া হয়। সে সময়ই কথা উঠেছিল যে আনাসের নেতৃত্বে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। তবে সেই গুঞ্জন আর সত্য হয়নি।

শফী হত্যার বিচার হতে হবে

‘শাহ আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি‘ উল্লেখ করে আনাস মাদানী বলেন, ‘এর জন্য যারা দায়ী, তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে সরকারকে ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

কওমি মাদ্রাসা খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিরীহ ও নিরপরাধ আলেমদের যেন কোনো প্রকার হয়রানি না করা হয়।’

আল্লামা শফী তার দায়িত্ব কখনও এড়িযে যাননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি সরকারের সঙ্গে শত্রুতাও দেখাননি এবং তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপদেশ দিতেও পিছপা হননি। অনেকবার সরকারকে তিনি সতর্ক করেছেন। ফলে এই মধ্যমপন্থায় থাকার কারণে তিনি সরকার থেকে অনেক দাবি আদায় করতে পেরেছেন। কওমি স্বীকৃতি তার মধ্যে অন্যতম।’

লালবাগ মাদ্রাসার মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘আজকে আমরা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে আছি। কেন আজ এই বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হলো, কারা এর জন্য দায়ী সবই আপনারা জানেন। সময় এলেই হুজুরের খুনিদের বিচার করা হবে।’

আবদুল হক গাওছালী বলেন, ‘তার (আল্লামা শফী) মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি। এর দায়ীদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই।’

কাদিয়ানি নামে পরিচিত আহমদিয়া মুসলিমদের ‘অমুসলিম’ ঘোষণার দাবিও জানানো হয় আলোচনায়।

খুলনা থেকে আসা মুফতি গোলামুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান সরকার ইসলামের জন্য অনেক ভালো ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। আর একটি পদক্ষেপ নিতে হবে। সেটা হলো, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা। আশা করি, সরকার আমাদের এ দাবি মেনে নেবে।’

অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ইউসুফ মাদানী, দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আনাস মাদানী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফরিদাবাদ মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস মুফতি নুরুল আমিন, হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুল ইসলাম জাদীদ, পটুয়াখালীর মাওলানা আব্দুল হক কাউসারী, মাওলানা ইসমাতুল্লাহ কাসেমী ফরিদপুর, মাওলানা আমিনুল ইসলাম ময়মনসিংহ, মাওলানা আব্দুল কাদের বরিশাল, মাওলানা কামরুল ইসলাম, সিলেটের মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের নেতা মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান।

এ বিভাগের আরো খবর