‘একজন মানুষ কয়বার জন্মায়’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে এ প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আপনারা বেগম খালেদা জিয়াকে এভাবে পাঁচ-ছয়টি জন্মের তারিখ দিয়ে কেন বারবার জন্মগ্রহণ করালেন!’
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার জন্মদিনের বিভিন্ন তারিখ ব্যবহারের বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, রোববার হাইকোর্টের এই রুল জারির পর মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান মন্ত্রী।
পাসপোর্ট ও করোনা টেস্ট রিপোর্টে খালেদা জিয়ার জন্মতারিখের চিত্র নিজের আইপ্যাড থেকে সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন হাছান মাহমুদ।
বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, মেট্রিক পরীক্ষার ফরমে খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সাল। আবার তার বিবাহ সনদে জন্মের তারিখ উল্লেখ আছে ৫ আগস্ট ১৯৪৪ সাল। ১৯৯১ সালে তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তখন সরকারি নথিতে তার জন্মতারিখ উল্লেখ আছে ১৯ আগস্ট ১৯৪৭ সাল। আর বর্তমানে যে পাসপোর্ট তিনি ব্যবহার করছেন, সেখানে তার জন্মতারিখ উল্লেখ আছে ৫ আগস্ট ১৯৪৬ সাল। এবং অতি সম্প্রতি তিনি যে করোনার টেস্ট করেছেন, সেখানে তার জন্মের তারিখ উল্লেখ আছে ৮ মে ১৯৪৬ সাল। কটি জন্ম তারিখ হলো!’
১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জন্মনিবন্ধনের সব নথি হাইকোর্টে জমা দেয়ার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুন অর রশিদ রিটটি করেছেন।
সরকারি কোনো নথিতে খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ ১৫ আগস্ট উল্লেখ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে ১৫ আগস্ট কেক কাটা হয় সেদিনের হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করার জন্য, উৎসাহ দেয়ার জন্য, ১৫ আগস্টের এই মর্মান্তিক ঘটনাকে উপহাস করার জন্য।’
হাছান দাবি করেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবরা বেগম খালেদা জিয়ার জন্মের তারিখ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন এবং তারা আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন, আদালতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের পাঁচটা জন্মতারিখ হওয়া মানে, তার জন্মের তারিখ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, এটা তারাই করেছেন। সরকার বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বপ্রণোদিতভাবে বিষয়টি বলেনি। আদালত নির্দেশনা দিয়েছে বিধায় সরকারকে আদালতে সমস্ত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য রেখেছেন সেগুলো হাইকোর্টের প্রতি, আইন-আদালতের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের মতো বলেও মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী।
বিএনপি অবশ্য তিন বছর ধরে ১৫ আগস্ট ঘটা করে জন্মদিন পালন করছে না। কোনো কেক সেদিন কাটা হয় না। আর দলের পক্ষ থেকে কর্মী-সমর্থকদেরকেও কেক না কেটে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার অনুরোধ করা হয়।
তবে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা এটা মানছেন না। তারা ফেসবুক লাইভে এসে কেক কাটেন ১৫ আগস্ট।