যখনই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে তখনই শেয়ার বাজার শুয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম রুমিন ফারহানা।
জাতীয় সংসদে সম্পূরক বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় সোমবার তিনি এ কথা বলেন।
রুমিন বলেন, ‘এটা একটা অদ্ভুত সম্পর্ক। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর যখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলো তখনই শেয়ার বাজার শুয়ে পড়ল। পরে যখন ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় আসল তখনও শেয়ার বাজারের একই অবস্থা।’
শেয়ারবাজার নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের একটি বক্তব্য উদ্বৃত করে রুমিন বলেন, ‘তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বললেন- “আমি শেয়ার বাজার বুঝিনা ভাই, এটা হলো ফটকা বাজার”। যে সরকারের অর্থমন্ত্রী বলতে পারেন, আমি শেয়ার বাজার বুঝিনা, তার আর অর্থমন্ত্রী থাকার অধিকার থাকে কি না, সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। যদিও তিনি এখন সাবেক হয়ে গেছেন। যদিও তিনি স্পষ্ট কথা বলতেন। তা যদি দলের বিপক্ষেও যায়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তিনি বলেছিলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যংক দেয়া হয়। যে দেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক দেয়া হয়, তখন সে দেশের অর্থনীতি নিয়ে বলতে তো ডেফিনেটলি চিন্তা করতে হয়।’
ব্যাংক লুটেরাদের বাঁচাতে বর্তমান সরকার নতুন নতুন আইন করছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন রুমিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখি যারা ব্যাংকের টাকা লুট করতেছেন, তাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য একটার পর একটা নতুন আইন হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে এক একটি ব্যাংক এক একটি পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এখন এক পরিবার থেকে তিনজন থাকতে পারবেন ব্যাংকের পরিচালক। একাধিক ক্রমে তিন মেয়াদে থাকতে পারবেন তারা। এই যে পরিবর্তন, এই পরিবর্তনের জন্য এক একটি পরিবার এক একটি ব্যাংকের মালিক হয়ে যাচ্ছে। জনগণের টাকার হরিলুট হয়ে যাচ্ছে।
‘একবার সংসদে ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা হলো। আমরা ৩০০ ঋণ খেলাপির নাম দেখলাম। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা কিন্তু আমরা জানতে পারলাম না। ব্যাংকে যে টাকাগুলো থাকে তা আমাদের মতো আম জনতার আমানতের টাকা। সেই টাকা যখন এক ব্যাংকের পরিচালক আর এক ব্যাংকের পরিচালকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার সুবাদে এক ব্যাংক থেকে আর এক ব্যাংক ঋণ নেন… এই টাকা কিন্তু দেশে থাকে তাওনা। গত ১০ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।’
রুমিন জানান, দেশে মন্দ ঋণ কতো এটা একটা প্রশ্ন। ২০১৯ সালে সরকারের দেয়া হিসাব মতে দেশে মন্দ ঋণের পরিমান ছিল এক লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
‘২০২০ সালে শুনলাম তা কমে এক লাখ ১০ হাজার কোটি এবং ২০২১ সালে নাকি তা ৭৭ হাজার কোটিতে নেমেছে। অথচ আইএমএফ বলছে দেশে মন্দ ঋণের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি। আবার কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ বলেন, এর পরিমান সাড়ে তিন থেকে চার লাখ কোটি টাকারও বেশি।’