পাঁচ বছর আগে ভারতে ইসরায়েলি নেতার সঙ্গে ছবি প্রকাশের পর গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে নতুন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার ছয় বছর পর চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানায় করা নাশকতার এক আমলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে রোববার আদালতে আবেদন করা হয়। পরে রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসাইন মোহাম্মদ রেজা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী।
এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে নাশকতা, চেক প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় আসামি হন আসলাম। সব কটি মামলায় জামিন পেয়েছেন বলে জানান তার আইনজীবী হাসিবুর রহমান।
এর আগে ভারত সফরে গিয়ে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পাটির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে তার হাসিমুখে কয়েকটি ছবি গণমাধ্যমে ফাঁস হয়। সে সময় বিষয়টি তুমুল আলোচনার তৈরি করে।
মেন্দি সাফাদি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট বলে সে সময় লেখালেখি হয়েছিল।
আসলাম তখন বলেন, এই সফর রাজনৈতিক ছিল না, তার ব্যবসায়িক সফর ছিল।
বিএনপি তখন আসলামের পক্ষে দাঁড়ালেও সম্প্রতি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসলামের দায় বিএনপি নেবে না।
বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল তুলে দেয়ার সমালোচনা করে সম্প্রতি বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে আসলামের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন ফখরুল। তখন তিনি আসলামের সেই বিষয়টিকে তার ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করেন।
আসলাম চৌধুরী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এবি ব্যাংকের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ আত্মসাতের অভিযোগও আছে।
এই অভিযোগে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসলাম চৌধুরীর পারিবারিক মালিকানাধীন রাইজিং স্টিল লিমিটেড পুরোনো জাহাজ ক্রয়ের জন্য ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনটি ঋণপত্রের (এলাসি) বিপরীতে এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৫ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করেননি।
গত ৩০ মে আসলাম চৌধুরীকে হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সেই আদেশ স্থগিত হয়েছে।
তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর দিন আগামী ২০ জুন পর্যন্ত তার জামিন স্থগিত করে এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলেছে আপিল বিভাগ।