সেনাবাহিনীর হাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যার ঘটনা সামনে এনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মানুষ হত্যা করে কেউ যে রেহাই পায় না তার প্রমাণ জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড।’
রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবারকে বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘যে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে তিনি ক্ষমতা দখল করেছিলেন, তাদের হাতেই জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। আমরা কোনো হত্যাকাণ্ডই সমর্থন করি না এবং এভাবে যিনি মানুষ হত্যা করেন, তিনি যে রক্ষা পান না সেটির প্রমাণ হচ্ছে জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড।’
‘জিয়াউর রহমানের হত্যার রাজনীতি দেশের ইতিহাসে এটি কালো অধ্যায়’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করতে সশস্ত্র বাহিনীর হাজার হাজার জওয়ান এবং অফিসারকে হত্যা করে খুনতন্ত্র কায়েম করেছিলেন, দিনের পর দিন কারফিউ দিয়ে দেশে কারফিউতন্ত্র কায়েম করেছিলেন তবু নিজে রক্ষা পাননি।’
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তা নয়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের তিনি দেশে-বিদেশে পুনর্বাসিত করেছিলেন, দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুহত্যার বিচার না হওয়ার জন্য ইনডেমনিটি বিল সংসদে পাস করেছিলেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, তিনি যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেগম খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে এবং তার পুত্র তারেক রহমানের পরিচালনায় যেভাবে ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাসে এ ধরনের হামলা খুবই বিরল।’
এ ছাড়া বিএনপি আমলে আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ এএমএস কিবরিয়া, খুলনার মঞ্জুরুল, হুমায়ুন কবীর বালু, গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী, নামাজরত মসজিদের ইমাম, বৌদ্ধ ভিক্ষু, বহু সাংবাদিকসহ হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানান হাছান মাহমুদ।
‘আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনের চেষ্টা করছে’- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে নিবন্ধিত দল এবং গত নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায় দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিরাজমান। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এ সমস্ত কথা বলে আসলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেন। আর তারা মাঝেমধ্যে নির্বাচন-উপনির্বাচন বর্জন করেন, করবেন বলে ঘোষণা দেন। এটির কারণ, নির্বাচনে তারা ক্রমাগতভাবে হেরে যাচ্ছে।’