সরকার আইন-আদালতকে নিজের সুবিধায় ইচ্ছেমত ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঠাকুরগাঁওয়ের আশ্রমপাড়ায় হাওলাদার গেস্ট হাউজে রোববার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ‘আইনশৃংখলা বাহিনীকে সরকার নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে আইন বলতে কিছু নেই, বিচার বলতে কিছু নেই। সবকিছু মিলিয়ে সরকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে চরম দু:সময় চলছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বে খুব খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মহামারি ভয়ংকরভাবে আঘাত করতে পারে, তার নমুনা দেখছি।
‘দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুব খারাপ। অসংখ্য মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে। দেশের প্রধান প্রধান খাত থেকে আয়ের পরিমান কমে গেছে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের মানুষের মূল আশা আকাংশা ছিল একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক সার্বোভৌম রাষ্ট্র নির্মাণ করা। যেখানে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু থাকবে, দায়িত্ববোধ থাকবে; এসব বিষয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত সুচারুভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আজও তারা সেই শাসন ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠা করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আইন আদালতকে তারা ইচ্ছে মতো হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিলের মধ্য দিয়ে তারা ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করছে। দেশের মানুষের অধিকার হরণের জন্য যে হাতিয়ার তৈরি করা দরকার, সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মাধ্যমে তারা করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ডিজিটাল সিকিউরিটিসহ যে আইনগুলো সরকার প্রণয়ন করেছে, তাতে মানুষের স্বাধীনতা শুণ্যের কোটায় চলে এসেছে।
‘সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষ তাদের মত প্রকাশ করতে পারছে না। তারা কিছু লিখলেই বা বললেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে ৭ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে গৃহবধূ পর্যন্ত কেউ ছাড় পাচ্ছে না। এ আইনের আওতায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জামিন পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না।’
সভায় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আব্দুল হালিম, বদিউজ্জামান বাদল, এনতাজুল হক, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি আল মামুন আলমসহ অনেকে।