করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে সরকারের কাছে করা আবেদনে শনিবারই সিদ্ধান্ত জানাবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বলেছেন, সিদ্ধান্ত রোববার পাঠিয়ে দেবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
শনিবার দুপুর একটার দিকে মন্ত্রী নিউজবাংলাকে জানান, খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দরের করা আবেদনটি বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এখনও মতামত বা অভিমত জানাননি। তিনি বলেন, ‘এখনও কিছু হয়নি।’
কবে নাগাদ বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে পারে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের মধ্যে আমি আমার অপিনিয়ন দিয়ে দেব। কিন্তু আজকে যেহেতু শনিবার, কালকে (রোববার) সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল পৌঁছে যাবে।’
শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় মন্ত্রণালয়ে নথিটি গ্রহণ করার জন্য কেউ থাকবেন না বলেই রোববার সকালে সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলেও জানান আনিসুল হক।
বিএনপি নেত্রীকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যেতে বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের ধানমন্ডির বাসায় গিয়ে আবেদন করেন শামীম এস্কান্দর। সেদিন রাতেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পরদিন বৃহস্পতিবার গুলশানে নিজ বাড়িতে আইনমন্ত্রী জানান, ওই দিনের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে সিদ্ধান্ত হবে না। তবে আবেদনটি মানবিকভাবে দেখা হচ্ছে বলে।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা পাওয়া বিএনপি নেত্রীকে ২০২০ সালের মার্চে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয় দণ্ড স্থগিত করে। তাকে মুক্ত করতে বিএনপির সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আছে আবেদন করা হলে তিনি নির্বাহী আদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দণ্ড স্থগিত করার ব্যবস্থা করেন।
প্রথমে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হলেও পরে দুই দফায় আরও ছয় মাস করে সময় বাড়ানো হয়।
মুক্তির ক্ষেত্রে দুটি শর্তের কথা জানানো হয় সরকার এবং বিএনপির পক্ষ থেকে। শর্তে বলা হয়, বিএনপি নেত্রীকে চিকিৎসা নিতে হবে দেশেই আর তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
যদিও প্রকাশিত শর্তের বাইরেও আরও শর্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, মুক্তির পর এক বছরেও বিএনপি নেত্রী রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি, কোনো বক্তব্য, বিবৃতি দেননি।
এর মধ্যে গত ১১ এপ্রিল বিএনপি নেত্রীর করোনা ধরা পড়ে। আর তিনি নানান শারীরিক জটিলতা নিয়ে ২৭ এপ্রিল ভর্তি হন হাসপাতালে।
এরই মধ্যে বিএনপি নেত্রী করোনা থেকে সেরে উঠেছেন বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার আরও কিছু রোগ রয়েছে। এর মধ্যে আছে বাতজ্বর, হাঁটুর ব্যথা, চোখের সমস্যা, ডায়াবেটিস।