বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দেয়ার আবেদন নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত হবে না বলেও জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে আবেদনটি মানবিকভাবে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি পাওয়া গেছে বলে দলের নেতাদের সূত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা পাওয়া বিএনপি নেত্রীকে ২০২০ সালের মার্চে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয় দণ্ড স্থগিত করে। তাকে মুক্ত করতে বিএনপির সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আছে আবেদন করা হলে তিনি নির্বাহী আদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দণ্ড স্থগিত করার ব্যবস্থা করেন।
প্রথমে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হলেও পরে দুই দফায় আরও ছয় মাস করে সময় বাড়ানো হয়।
এই মুক্তির ক্ষেত্রে দুটি শর্তের কথা জানানো হয়েছে সরকার এবং বিএনপির পক্ষ থেকে। জানানো হয়েছে, বিএনপি নেত্রীকে চিকিৎসা নিতে হবে দেশেই আর তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
যদি প্রকাশিত শর্তের বাইরেও আরও শর্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, মুক্তির পর এক বছরেও বিএনপি নেত্রী রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি, কোনো বক্তব্য, বিবৃতি দেননি।
এর মধ্যে গত ১১ এপ্রিল বিএনপি নেত্রীর করোনা ধরা পড়ে। আর তিনি নানা জটিলতা নিয়ে ২৭ এপ্রিল ভর্তি হন হাসপাতালে।
এরই মধ্যে বিএনপি নেত্রী করোনা থেকে সেরে উঠেছেন বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাতজ্বর, হাঁটুর ব্যাথা, চোখের সমস্যা, ডায়াবেটিসসক নানা রোগে ভুগছেন।
হাসপাতালে ভর্তির পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে বিএনপি নেত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদনও করা হয়েছে। বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের বাসায় দিয়ে দেখা করেন খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ ইস্কান্দার।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাহী আদেশে দুটি শর্তে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। প্রথম শর্ত হচ্ছে তিনি বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেবেন। দ্বিতীয়টি ছিল বিদেশে চিকিৎসা নেবেন না। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করেই এ আবেদন নিষ্পত্তি করবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন, বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নিতে হলে আদালতের অনুমতি লাগবে। তবে সেই উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে।
তবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আদালতের কোনো বিষয় জড়িত নেই। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন।’
যে প্রক্রিয়ায় বিবেচনা
আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার জানিয়েছেন, বিএনপি নেত্রীর আবেদনটি কোন প্রক্রিয়ায় বিবেচনা করা হবে।
বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় (আইন মন্ত্রী) মতামত দিলে সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সামারি আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে। এরপর তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’
আবেদনে কোনো দেশের কথা বলা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘না, তারা কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি। শুধু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর কিছু বলেননি।’