বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রায় আদালতের অনুমতির দরকার নেই; বরং নির্বাহী আদেশেই তিনি বিদেশ যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
বুধবার ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।
সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘কোনো প্রকার আবেদন ছাড়াই সরকার বেগম জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশযাত্রায় অনুমতি দিতে পারে। এখানে আদালতের কোনো ভূমিকা নেই।’
তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারা মোতাবেক শর্ত সাপেক্ষে বা শর্ত ছাড়া যেকোনো আসামির সাজা মওকুফ বা সাজা স্থগিত করতে পারে সরকার। খালেদা জিয়াকে যখন মুক্তি দেয়া হয়, তখন শর্ত দেয়া হয়েছিল তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
‘এখন এ অবস্থায় সরকারের মানবিক দায়িত্ব, নৈতিক দায়িত্ব, দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বর্তমানে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত।’ কোনো দরখাস্ত ছাড়াই সরকার অনুমতি দিতে পারে বলেও তিনি জানান। এখানে আদালতের কোনো ভূমিকা নেই। এটা সম্পূর্ণ নির্বাহী আদেশেই হতে পারে।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘সাজা স্থগিত হয়েছিল প্রশাসনিক আদেশে। এখানে আদালতের কোনো ভূমিকা নেই। আশা করি, সরকার তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেবে। এখানে আইনগত কোনো বাধা নেই।’
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া ট্রাস্ট দুর্নীতির দুটি মামলায় ১৭ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে গত বছরের ২৫ মার্চ তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয় সরকার।
এরপর কয়েক দফায় সেই মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়। মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানের নিজের বাসভবনে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি করোনা আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিএনপি নেত্রীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে তার পরিবার ও দল থেকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।
সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দর।
বিষয়টাকে নিছক রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দেখছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়ার) এই অসুস্থতার অজুহাতকে সামনে এনে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। করোনার চিকিৎসা তো আমাদের দেশে যা, ইংল্যান্ডেও তা, সিঙ্গাপুরেও তা, ইউরোপেও তা। সুতরাং এই ধরনের দাবি আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’