বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের জেলখানাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত আসামিরা ছাড়া রাজনৈতিক বন্দী ও লঘুদণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীদের দ্রুত মুক্তি দেয়া জরুরি।
বৃহস্পতিবার দেশের কারাগারগুলোতে করোনার সংক্রমণের খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সই করা বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্প্রতি সারা দেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলের কয়েক শত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
‘বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এমন পরিস্থিতিতে ধারণক্ষমতার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি বন্দি থাকায় কারাগারে স্বাস্থ্যবিধি মানা বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়। ফলে কারাগারগুলো করোনাভাইরাস সংক্রমণের তীব্র ঝুঁকিতে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে বেশ কিছু কারাগারে বন্দিদের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যু ঘটেছে বলেও খবর প্রকাশিত হয়েছে। কারাগারগুলোতে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। এ অবস্থায় বন্দিদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে বন্দি ও তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা চরম উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছেন।’
কারাগারে করোনাভাইরাস আরও বিস্তার লাভ করলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত বিচারে চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিরা ছাড়া রাজনৈতিক কারণে বন্দি ও লঘু অপরাধে কারাবন্দিদের মানবিক বিবেচনায় জামিন দেয়া হলে করোনাভাইরাসের এই ভয়াবহ পরিণতি থেকে বন্দিরা রক্ষা পেতে পারে বলে বিএনপি মনে করে।
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু চূড়ান্ত বিচারের আগে কাউকেই দোষী বলা যায় না, সেহেতু বিনা বিচারে একজন নির্দোষ লোকও যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাহলে মৃত মানুষটির জীবন সরকার ফিরিয়ে দিতে পারবে না।’
‘তাই সরকারের প্রতি আহবান জানাই, দেশের জেলখানাগুলোতে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস মহামারি রোধে দ্রুত গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত আসামিরা ছাড়া রাজনৈতিক বন্দী ও লঘুদণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীদের দ্রুত মুক্তি দেয়া হোক।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি সারা দেশ থেকে গ্রেপ্তার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলের কয়েক শ নেতা-কর্মীদেরও মুক্তি দাবি করছি। কারাগারে করোনা সংক্রমণ রোধে বিজ্ঞানসম্মত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় অনেক বন্দির জামিন আবেদনের শুনানী হচ্ছে না। তাই বন্দিরা যাতে আইনগতভাবে দ্রুত জামিন পেতে পারেন সেজন্য আদালতের বেঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোরও আহবান জানান তিনি।