বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোদির সফরে শাপলা চত্বরের পুনরাবৃত্তি চেয়েছিল হেফাজত

  •    
  • ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:১৯

ডিবির রিমান্ডে থাকা হেফাজত নেতারা এ কথা স্বীকার করেছেন। নিজ নিজ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে হেফাজতকে ব্যবহার করছেন নেতারা।

গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর সামনে রেখে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর কায়দায় তাণ্ডব চালাতে চেয়েছিল হেফাজত। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ঘিরে এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

পুলিশের রিমান্ডে থাকা মামুনুল হকসহ অন্যান্য হেফাজত নেতার স্বীকারোক্তিতে এসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, হেফাজতের সাম্প্রতিক আন্দোলন এবং নাশকতার ঘটনায় সারা দেশে বেশ কিছু মামলা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ডিএমপিতে ১২টি মামলা আর ২০১৩ সালে শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ৫৩টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো ডিবির কাছে এখন তদন্তাধীন।

মাহবুব আলম বলেন, ‘এসব মামলায় হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে ইতোমধ্যে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের অনেকেই আমাদের কাছে রিমান্ডে আছে। আমরা জানার চেষ্টা করছি, ২০১৩ সালের নাশকতা এবং সাম্প্রতিক নাশকতার পেছনে কারা ছিল এবং সেগুলোর কারণ কী ছিল।’

মাহবুব আলম বলেন, ‘২০১৩ সালে সরকার পতনের জন্য একটি চক্রান্ত হয়েছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সে চক্রান্তে অংশ নিয়েছিল। তারা হেফাজতকে ব্যবহার করে তাদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। একইভাবে এ বছরও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে যে ধরনের নাশকতা করা হয়েছে, এখানেও একই ধরনের আরেকটি চক্রান্ত হয়েছে, এটা আমাদের তদন্তে একদমই পরিষ্কার।

‘সবচেয়ে বড় কথা হলো, হেফাজতে ইসলাম নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন বলছে, কিন্তু বাস্তবে তারা অনেকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। হেফাজতের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলেরই আলাদা আলাদা এজেন্ডা আছে। সে এজেন্ডাগুলো তারা বাস্তবায়ন করতে চায় হেফাজতকে ব্যবহার করে। কারণ, হেফাজত এমন একটি সংগঠন, যাদের ডাকে মাদ্রাসাছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসে এবং ব্যাপক লোকসমাগম হয়। এগুলো আমরা রিমান্ডে থাকা নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছি।’

শাপলা চত্বরের মতো ফের সমাবেশ করার ছক কষছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। ছবি: নিউজবাংলা

ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, ‘২০১৩ সালে জুনায়েদ বাবুনগরী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। কিছুদিন আগে মুফতি ফখরুলও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেসব জবানবন্দিতে এই কন্সপাইরেসি সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি।’

এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘হেফাজতকে এ নেতারা ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদেরকে তারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। এভাবেই তারা ক্ষমতার স্বাদ নিতে ও সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিল।

‘আর সরকারের পতন ঘটিয়ে তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তানের মডেল বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। তাদের আদর্শ হলো পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান।’

হেফাজতে ইসলামের মধ্যে আবার একটি উগ্রবাদী গ্রুপ আছে মন্তব্য করে মাহবুব আলম জানান, তদন্তের মাধ্যমে এ উগ্রবাদীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনে হয়তো আরও গ্রেপ্তার হতে পারে। এসব অভিযানে ভিডিও ফুটেজ, নেতাদের একে অপরের সঙ্গে ফোনালাপ ও রিমান্ডে পাওয়া তথ্যকে প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে আছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। ছবি: নিউজবাংলা

মাহবুব আলম আরও জানান, হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতা ইতোমধ্যে বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। কেউ কেউ আবার নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন, মাদ্রাসা দখলের মতো অপকর্ম হয়েছে। এ ছাড়া সিন্ডিকেট করে ওয়াজ মাহফিলগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। রাবেতাতুল ওয়াজি নামে সংগঠনের মাধ্যমে সিন্ডকেট করে দেশের সব ওয়াজের অনুষ্ঠানে হেফাজত নেতারাই যাচ্ছেন।

এতে একদিকে তারা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে সেসব ওয়াজে উগ্রবাদ ছড়াচ্ছেন ও রাষ্ট্রবিরোধী উসকানি দিচ্ছেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পথভ্রষ্ট করতে তারা এ পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার।

এ বিভাগের আরো খবর