বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক দানবের প্রকাশ্য পৃষ্ঠপোষক দল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অভিযোগ তুলে বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন তাণ্ডবে বিএনপি জড়িত ছিল।
শুক্রবার সকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত অসহায়, কর্মহীন মানুষের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
কাদের বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক দানবের প্রকাশ্য পৃষ্ঠপোষক দল হচ্ছে বিএনপি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের সব ঘটনায়ই বিএনপি জড়িত ছিল।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান ঘিরে গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও হরতালের নামে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলায় তাণ্ডব চালায় হেফাজত। বেশ কয়েকজন মানুষ প্রাণ হারায়।
বিএনপির ইন্ধনেই একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এসব করেছিল বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন সরকার নাকি দেশকে নরকপুরিতে পরিণত করেছে। প্রকৃতপক্ষে সরকার নয়, জনগণ মনে করে বিএনপির উসকানিতে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী গত ২৬ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে নরকপুরি বানিয়েছিল।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার নয়, আন্দোলনের নামে প্রকাশ্যে ও গোপনে বিএনপির আগুন-সন্ত্রাসই বর্বরতার নামান্তর। জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে বিএনপিই এখন বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ২০০১ সালে নির্বাচনের পর যেমনি বর্বরতা চালিয়েছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর।
জনগণের সহায়তায় সরকার সাম্প্রদায়িক দানবীয় অপশক্তিকে মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। অন্ধকারের অপশক্তির কালো হাত ভেঙে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সম্ভাবনার সোনালি দিগন্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
ওবায়দুল কাদেরের মতে, জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি মানুষের পাশে থেকে আস্থা অর্জন করা একমাত্র রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। চলমান করোনা-সংকটেও সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সারা দেশের অসহায়, খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জনপ্রতিনিধি ও দলের নেতা-কর্মীরা শুধু সুরক্ষাসামগ্রী নয় নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা নিয়েও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’
এ সময় লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে দলের নেতা-কর্মী ও সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের আহ্বান জানান কাদের।
তিনি বলেন, ‘করোনাকে পরাজিত না করা পর্যন্ত দুস্থ, অসহায় মানুষের মাঝে নগদ অর্থ এবং খাদ্যসামগ্রী বিতরণ চলমান রাখতে হবে।
‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন দুইটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, প্রথমটি হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে জীবিকার জন্য খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো। দলীয় নেতা-কর্মীদের সারা দেশে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি করাকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ সেবা দিতে হবে।’
ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা জানান, এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দলের কর্মী হিসেবে নয়, দেশের কর্মী হিসেবে কাজ করতে হবে। করোনা ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করতে সবাইকে ঐকবদ্ধ থাকতে হবে।
রাজধানীর পোস্তগোলায় ইফতারসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।