দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে মির্জা আব্বাসের কাছে চিঠি দিয়েছে বিব্রত বিএনপি।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ১৭ এপ্রিল যে বক্তব্য রেখেছেন, পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে তার উল্টো কথা বললেও তাতে সন্তুষ্ট নন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ কারণেই চিঠিটি দেয়া হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন দলের দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ওই নেতা।
‘আমার নাম বলবেন না’- এমন কথা বলে ওই নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মির্জা আব্বাসকে শোকজ করিনি। কিন্তু তিনি যা বলেছেন, সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলেছি।’
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পর থেকে এই ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করে আসছে বিএনপি। অন্তর্ধানের ৯ বছরপূর্তিতে গত সোমবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে মির্জা আব্বাস যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে বিব্রত হয় বিএনপি।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীবিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে সেই আলোচনায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব যে ভূলুণ্ঠিত হতে যাচ্ছে এটার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো ইলিয়াস আলীর গুম। আমি জানি, বাংলাদেশ সরকার বা আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াসকে গুম করে নাই। কিন্তু গুমটা করল কে? এই সরকারের কাছে আমি এটা জানতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয় মারাত্মক রকমের। ইলিয়াস তাদের খুব গালিগালাজ করেছিল। সেই যে পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো আমাদের দলে এখনও রয়ে গেছে।’
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে আব্বাস আরও বলেন, ‘যদি এদেরকে দল থেকে বিতাড়িত না করেন, তাহলে কোনো পরিস্থিতিতেই দল সামনে এগোতে পারবে না।’
পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে মির্জা আব্বাস একবার নিজের বক্তব্য অস্বীকার করেন। কিন্তু বক্তব্যের রেকর্ড আছে জানানো হলে তিনি বলেন, কটাক্ষ করে বলেছেন।
তার বক্তব্যের একটি অংশ থেকে এক লাইন, অপর অংশ থেকে আরেক লাইন নিয়ে মনের মাধুরি মিলিয়ে লেখার অভিযোগ এনে বিএনপি নেতা সেদিন বলেন, ‘আমি বলেছি, আমার দলের মধ্যে যদি কেউ থাকে যারা নাকি শয়তান, এদেরকে দলের একটু বাছাই করা দরকার।’
বিএনপিতে যা হয়েছে
বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ওই নেতা জানান, ভার্চুয়াল সভার পর মির্জা আব্বাসকে দলের পক্ষ থেকে তিনটি ড্রাফট দেয়া হয়, যা তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন। সেখানে তাকে অনুতপ্ত হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আব্বাস সংবাদ সম্মেলনে সেই তিনটি ড্রাফটের কোনো বক্তব্য দেননি। এরপর দলের হাইকমান্ড তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ইমরান সালেহ প্রিন্সও জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কোনো চিঠি পাইনি। আপনারা কোথা থেকে খবর পেলেন, সেখান থেকে জানেন কী চিঠি দেয়া হয়েছে, কী ব্যাখা চেয়েছে। আমার কিছু বলার নেই।’
'দল থেকে এমন কোনো চিঠি আমি আশা করিনি। এ রকম হয়ে থাকলে তা দুঃখজনক’-বলেন, বিএনপি নেতা।